১৩ আগস্ট মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের বাগবাজারে বিশ্বের সর্বপ্রথম শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু মিউজিয়াম এবং তার ছাদে অবস্থিত সৌর শক্তি কেন্দ্রের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাগবাজারের এই সংগ্রহশালাটি বুধবার ১৪ আগস্ট থেকে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
২০০৮ সাল শ্রীচৈতন্যের ভাবধারা প্রসারিত করতে সংগ্রহশালা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। তারপর ২০১৩ সালে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় সংগ্রহশালার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
বাগবাজারে মঠের চারতলা ভবনের ১৬,০০০ বর্গফুট জুড়ে তৈরি হয়েছে বিশ্বের প্রথম শ্রী চৈতন্য সংগ্রহশালা।গৌড়ীয় মঠ সূত্রে খবর, সোমবার ছাড়া মিউজিয়ামটি প্রতিদিন সকাল দশটা থেকে দুপুর একটা এবং বিকেল তিনটে থেকে সন্ধ্যা ছ’টা পর্যন্ত সাধারণের দেখার জন্য খোলা থাকবে ।
কলকাতার নাম বিশ্ববাসীর মুখে-মুখে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর আমলে সৃজনের কাজগুলো খুব ভালভাবে করে দেখাতে পারছেন। এখানে তাঁর কৃতিত্ব রয়েছে। আমরা রাজনীতির কথা কিছু সময়ের জন্যে ছেড়ে দিলাম।
মমতা বলেন, ‘আমি গর্বিত শ্রীচৈতন্য সংগ্রহশালা সারা ভারতে তথা বিশ্বে প্রথম বাংলায় তৈরি হল’।
মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, বিশ্বের মহা মানব বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্বামী বিবেকানন্দ, শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু সকলেই এক বাণী রেখে গেছেন জগতবাসীর কাছে। তা হল মনুষ্যত্বের বাণী।
শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু অন্তরঙ্গে কৃষ্ণ, বহিরঙ্গে রাধা। তাঁর দেওয়া হরি নামে একীভূত হয়ে গেছে সারা পৃথিবী। তাঁর কাছে জগাই-মাধাইয়ের ভেদ নেই।
চৈতন্যের মতে ‘মেরেছ কলসির কানা, তাই বলে কি প্রেম দেব না’! দ্বিজ-চণ্ডাল যেই হোন না কেন, হরি নামে সকলের অধিকার আছে। এমনকি চণ্ডালও যদি হরি ভক্ত হন, তাহলে তিনিও ব্রাহ্মণের থেকে শ্রেষ্ঠ। মহাপ্রভু বলেছেন, ‘চণ্ডালোপি দ্বিজশ্রেষ্ঠ হরিভক্তি পরায়ণা’।
তিলোত্তমা কলকাতায় এসে লীন হবে সারা বিশ্বের মানুষ। এর থেকে বড় পাওনা আর কি হতে পারে।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘কয়েক’শো বছর ধরে শ্রীচৈতন্যদেব আমাদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। তিনি পাঁচশো বছর আগে ভেদাভেদহীনতার কথা বলেছিলেন। সর্বধর্ম সমন্বয়ের কথা বলে গেছেন’।
অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, নবদ্বীপেও ৭০০ একর জমিতে ইস্কন মন্দির তৈরি করা হবে। ইতিমধ্যে সেই জমির ছাড়পত্র দিয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকার। এছাড়া নবদ্বীপে সংস্কৃত টোল করার কথাও জানান। সংস্কৃত কলেজ যে খুব শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পেতে চলেছে, সে উল্লেখও করেন।
এ ছাড়াও কলকাতা কর্পোরেশন বাগবাজারের জন্য একটি তোরণ তৈরি করবে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, বাগবাজারে ধর্মীয় ট্যুরিজম হাব বানানোর পরিকল্পনাও তাঁর সরকারের রয়েছে। তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের দায়িত্বে তা গড়ে উঠবে।
বাগবাজারে বিশ্বের সর্বপ্রথম শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু মিউজিয়াম এবং তার ছাদে অবস্থিত সৌর শক্তি কেন্দ্রের উদ্বোধন অনুষ্ঠান | Inauguration of world's first museum on Sri Chaitanya Mahaprabhu and rooftop solar power plant at Baghbazar #3 https://t.co/y68xVcG98T
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) August 13, 2019