About us

আমাদের সম্বন্ধে কিছু কথা

‘বঙ্গভঙ্গ’ ও ‘দেশভাগ’ বাঙালি চেতনায় এবং বাঙালি মননে যেন এক চিরস্থায়ী ক্ষত। যা সারবার নয়। ১৯০৫ সালে লর্ড কার্জন প্রথম যে বিভেদরেখা সৃষ্টি করেছিলেন এপার ওপার বাংলার মধ্যে তা আজ সুদূরপ্রসারিত। অনেক গভীর। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে হিন্দু-মুসলিম ঐক্য ছিল ভারতীয়দের এক শক্তি। কিন্তু বঙ্গভঙ্গ সেই ঐক্যে ফাটল ধরায়। ভেঙে দেয় বাঙালি মন।

আসলে তখন পূর্ববঙ্গ ভারতবর্ষেরই একটি অঞ্চল ছিল কোন আলাদা রাষ্ট্র নয়। যদিও দুই বাংলার যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল অপ্রতুল কিন্তু হৃদয় ছিল এক। তাই বাঙালি মন যেন অখণ্ড বাংলার দ্বিখণ্ডিত রূপ মেনে নিতে পারছিলনা।

‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’, বঙ্গভঙ্গের প্রেক্ষাপটে রবি ঠাকুর তাঁর লেখা এই গানে অখণ্ড বাংলার এক চিরাচরিত রূপ তুলে ধরেন। কুষ্টিয়ার বাউল গগন হরকরার “আমি কোথায় পাব তারে, আমার মনের মানুষ যে রে” গানের সুরেই রবীন্দ্রনাথ “আমার সোনার বাংলা” গানটির সুর করেন। বাঙালির কাছে এ যেন ছিল ‘বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদ’

১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে যখন পূর্ব পাকিস্তানের সৃষ্টি হয় সেটাও ছিল ইংরেজ কর্তৃক বাঙালি মানসিকতায় এক প্রচণ্ড আঘাত। যে বাঙালির কৃষ্টি, সংস্কৃতি এবং সাহিত্য সারা বিশ্বে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছিল, ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা আন্দোলনে যারা অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিল,  সামাজিক এবং রাজনৈতিক বিচ্ছেদের ফলে তারাই আজ ‘ঘটি’ আর ‘বাঙাল’ এই দুই প্রজাতিতে বিভক্ত। বিভক্ত এপার ওপার বাংলায়।

১৯৭১ সালে পাকিস্তানের শোষণের ফলে সৃষ্টি হওয়া বাংলাদেশে জাতীয়তাবোধ চেতনার উন্মেষ দেখতে পাওয়া ঠিকই কিন্তু এপার ওপার বাংলার বাঙালির ভাঙ্গা হৃদয় আর জোড়া লাগেনি।

‘বঙ্গভঙ্গ’ ও ‘দেশভাগ’ বাঙালি হৃদয়কে যেন ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছিল। আজও এপার ওপার বাংলার অনেক বাঙালির মনের কোণে এই ‘সোনার বাংলা’ সযত্নে লালিত। আজও অনেক স্বপ্নচারী বাঙালি ‘সোনার বাংলা’র স্মৃতি রোমন্থন করে উদাসী হয়ে যান।   

এপার ওপার বাংলার ঘটি আর বাঙালকে একসূত্রে গাঁথতে একটি প্রচেষ্টা নিয়েছে অভিজ্ঞ সাংবাদিকদের নিয়ে গঠিত ‘নর্থ ইস্ট নাও এপার ওপার বাংলা’ নামের এই বাংলা ওয়েব সাইট। মুঠোফোনের দৌলতে খবর যখন তাৎক্ষণিক, প্রযুক্তি যখন হাতের মুঠোয়, তখন এপার ওপার বাংলার বাঙালি সংবাদ পাঠকদের একসূত্রে গাঁথতে আমরা নিয়ে এসেছি আমাদের এই নিউজ সাইট bengali.nenow.inপড়ুন এবং পড়ান।