কলকাতা: মানুষ সবাই। আমাদের ছোট চোখেই সঠিক মানুষগুলোকে আমরা অবহেলা করি। মূলত আমাদের মানসিকতায় দোষ । তা না হলে সমাজে সমকামি বা এলজিবিটি কমিনিউটিকে এত যন্ত্রণা সহ্য করতে হতো না।
পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতে নাম আলোকিত করলেন আরো একজন ট্রান্সজেণ্ডার। তিনি বাহ্যিকভাবে ছিলেন পুরুষ৷ কিন্তু মনে প্রাণে নিজেকে মেয়ে বলে বিশ্বাস করতেন৷ জীবনে যে ঘাত প্রতিঘাতও কম ছিল না তা তো আমরা জানি৷ কারণ স্রোতের বিপরীতে কিছু হলেই আমরা রে রে করে যাই। তবে সব বাধা অতিক্রম করে মেধাতালিকায় সপ্তম হয়েছেন শরণ্যা৷
বুধবার প্রকাশিত হয়েছে উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল। পশ্চিমবঙ্গে ৮৭ জন রয়েছে প্রথম দশের মেধা তালিকায়। সেখানে শুধু হুগলি জেলার রয়েছে ১৮ জন। ৪৯০ পাওয়া শরণ্যার সাফল্যে অবশ্য এখন অনেকেই হাততালি দিচ্ছেন কিন্তু হয়তো এক সময় তাঁরাই অনেক কথা বলেছিলেন।
শরণ্যার সাফল্যে অন্তর থেকে আনন্দিত ডক্টর মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি শরণ্যার বেশ কয়েকটি ছবি শেয়ার করেছেন ফেসবুকে।
লিখেছেন, “আমার প্রার্থনা সত্যি হোলো, ভগবান শুনলেন আমার কথা উচ্চমাধ্যমিকে সেভেনথ হয়েছে আমাদের নিজের রক্ত স্মরণ্যা ঘোষ! আনন্দবাজার সাংবাদিক গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে জানানোর পর আনন্দাশ্রু আর থামেই না!
স্মরণ্যাকে ফোন করে জানালাম আমার বুকে ফোটা আনন্দ ঝর্ণার কথা! খুব বকেছি মেয়েটাকে! পরীক্ষার আগে আগে আমাকে বার বার ফোন করত হুগলীর জনাই থেকে, জানতে চাইত একজন ট্রান্স হিসেবে কি করবে কিভাবে চলবে , আমি বকতাম, এসব ভুলে যাও তুমি ট্রান্স, ছাত্রাণাং অধ্যয়নং তপঃ শুধু এইটা মনে রাখ!
মাধ্যমিকের রেজাল্ট বেরুনোর সময় আমি আক্ষেপ করেছিলাম কবে কোন ট্রান্স ছাত্রী স্ট্যান্ড করবে পরীক্ষায় যেন দেখে যেতে পারি! আমার মনে আছে আমার ছাত্রী এখন সে অধ্যাপিকা ছবি মাইতি কমেন্টে লিখেছিল খুব শীঘ্রই আপনার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হবে ! স্মরণ্যাকে অন্তর থেকে আশীর্বাদ করি ও যেন অনেক বড় হয়! ওদের বড় হওয়া প্রমাণ করবে ট্রান্সরা কত বড় মাপের মানুষ হতে পারে!
স্মরণ্যা নিজে হাতে দুর্গা প্রতিমা তৈরি করে! তবে আমি স্মরণ্যাকে বলব নামের বানানটা তুমি শরণ্যা করে নিলে আরো বেশি অর্থবহ হবে! জয় ঠাকুর জয় মা জয় স্বামীজী”।