কেওড়াতলা শ্মশানে জনপ্রিয় অভিনেতা তাপস পালের শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়েছে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়।
চোখের জলে পিতাকে বিদায় জানালেন কন্যা সোহিনী পাল, স্ত্রী নন্দিনী পাল, মেয়র ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস প্রমুখ।
কেওড়াতলা শ্মশানে তাপস পালের শ্রদ্ধায় গান সেল্যুট দেওয়া হলো।
অভিনেতা তাপস পাল থেকে যাবেন আজীবন বাঙালির হৃদয়ে।
তোমার বাড়ির সামনে দিয়ে আমার মরণ যাত্রা যেদিন যাবে! আহা এ সওয়া যায় না। যতবার যতভাবেই বলা হোক না কেন আছে দুঃখ; আছে মৃত্যু!
আমরা মানতে পারি না। পারবো না।
অভিনেতা থেকে নেতা হওয়া তাপস পালের মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন বলিউড অভিনেত্রী মাধুরি দীক্ষিত।
তাপসের বিপরীতেই ‘অবোধ’ ছবির মাধ্যমে ফিল্ম কেরিয়ার শুরু হয় এই বলিউড গ্ল্যামার কুইনের।
নিজের কেরিয়ারের প্রথম ছবির নায়কের মৃত্যুতে তিনি লিখেছেন, ‘তাপস পাল প্রয়াত হলেন। আমার অভিনয় জীবনের প্রথম যুগের বিভিন্ন অভিনেতাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। প্রার্থনা করি, এই কঠিন সময়ে ঈশ্বর তাঁর পরিবারের সহায় হবেন।’
১৯৮৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘অবোধ’ ছবির পরিচালক ছিলেন হীরেন নাগ। এই ছবিতে শঙ্কর সিংয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তাপস। আর গৌরীর চরিত্রে দেখা যায় মাধুরীকে।
শোকগ্রস্ত টলিউড অভিনেতা চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, “তাপস পালের মতো এমন এক অভিনেতার জীবনের শেষটা অত্যন্ত মর্মান্তিক।”
অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত জানাচ্ছেন, “এমন শক্তিশালী অভিনেতা খুব কম এসেছে, বাংলা ছবি যতদিন থাকবে, তিনি ততদিন থাকবেন। এত তাড়াতাড়ি তিনি চলে যাবেন বিশ্বাস হচ্ছে না।”
এই হঠাৎ মৃত্যুতে শোকাস্তব্ধ হয়েছেন বিজেপি নেতা অনুপম হাজরাও। এইসময় তাঁর ধরা গলায় বারবার শোনা গেল, “রাজনৈতিক মতাদর্শ দুজনের আলাদা হতেই পারে। কিন্তু আমার মধ্যে সঙ্গে সম্পর্ক খুবই ভাল ছিল। এত তাড়াতাড়ি তাঁর চলে যাওয়াটা কিছুতেই মানতে পারছি না!!”
অনুপম হাজরা ফেসবুকে এক বিশাল পোস্ট করে তাঁর সঙ্গে তাপস পালের সম্পর্কের কথা জানান। তিনি বলেন- তৃণমূলের নেতা হিসেবে নয়, তাঁর কয়েকটি উক্তির জন্য তিনি আজও সমালোচিত হয়। তবে অভিনয়ের দিক থেকে অভিনেতা হিসেবে তিনি ছিলেন অনন্য।
লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো, প্রত্যেকেই কিন্তু তাপস পালের মৃত্যুতে দল ভুলে শোকপ্রকাশ করেছেন।
কিন্তু মৃত্যুও ভোলাতে পারেনি বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জির যুদ্ধ।
শেষ শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে এসেও মমতার রাজনৈতিক মতামতঃ “কেন্দ্রীয় এজেন্সির চাপে, ক্ষতবিক্ষত হয়ে অকালে মৃত্যু হল তাপসের।”
এদিকে পাল্টা জবাব দিলীপ বাবুরঃ ‘‘তাপস পাল অসময়ে চলে গেলেন, অসময়ে অভিনয় ছেড়েদিলেন। যেভাবে তাঁর মৃত্যু হল,যে কষ্ট পেলেন, যে লোকেদের সঙ্গে ছিলেন, তাঁদের জন্য এই অবস্থা। তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ার দেখে সাধারণ মানুষের শিক্ষা নেওয়া উচিত যে কারা এখানে রাজনীতি করছেন। বোঝা উচিত সকলের। কারা এখান থেকে রাজনীতি করছেন। কারা ভাল মানুষকে খারাপ করছেন। সেটা বোঝার দরকার আছে’’।