মায়ের ওপর দীর্ঘদিন ধরে বাবার পাশবিক অত্যাচার দেখে আসছিল ছেলেটি। বছর পনেরোর ছেলেটি এবার আর সহ্য করতে পারেনি। বাবাকে মেরে সোজা হাজির হয়েছে থানায়।
শনিবার ছেলেটির আত্মসমর্পণে তখনো বিশ্বাস করতে পারেনি রাজারহাট থানার পুলিশ। কিন্তু পরক্ষণেই তাঁরা দেখতে পান ছোট্ট ছেলেটির হাতে রক্ত। সঙ্গে সঙ্গে তার বাড়িতে চলে যান। গিয়ে প্রত্যক্ষ করেন, ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছে তার বাবার রক্তাক্ত দেহটি। পাশে রক্তমাখা কুড়ুল এবং পাথরের চাঁই।
পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য আর জি কর হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।
বাবাকে হত্যা করা ছেলেটি থানায় আত্মসমর্পণকালে জানিয়েছে, মায়ের ওপর বাবার অত্যাচার দিনের পর দিন বেড়ে যাচ্ছিল। শনিবার তার বাবা ফের অশান্তি শুরু করায় সে আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারেনি।
কুড়ুল দিয়ে বাবার মাথায় আঘাত করার পর ফের পাথরের চাই দিয়ে আঘাত করে ওই কিশোর।
তবে এই হত্যাঘটনার পর থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না মৃতের স্ত্রী, বড় ছেলে এবং এক মেয়েকে। ফলে তদন্তকারীদের সংশয় রয়েছে, ঘটনায় ঐ কিশোর শুধু জড়িত নাকি পরিবারের বাকি সদস্যরাও এর মধ্যে রয়েছে।
স্থানীয় জনগণের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, মৃত ব্যক্তির দুটো বিয়ে। দ্বিতীয় স্ত্রী থাকেন বনগাঁ। তিনি প্রায় প্রতিদিনই বাড়িতে মদ্যপ অবস্থায় ফিরতেন। স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তি লেগেই থাকত। এমনকি বনগাঁর সেই দ্বিতীয় স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে আসবেন এই নিয়ে অশান্তি শুরু করেছিলেন প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে।
শনিবারও রাত সাড়ে ১১ টা নাগাদ তুমুল ঝগড়া শুরু করেন নিহত ব্যক্তি। পুলিশেরও একই সন্দেহ, দিনের পর দিন ধরে মায়ের উপরে অত্যাচার সহ্য করতে না পেরেই সম্ভবত এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কিশোর।
এদিকে মৃত ব্যক্তির এক পরিজন নিহতের স্ত্রী এবং দুই ছেলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। সে ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুন, ষড়যন্ত্রের মামলা রুজু করা হয়েছে।