৭৩ বছরে পড়ল দেশের স্বাধীনতা। মহা ধুমধামে স্বাধীনতা দিবস পালনের তোরজোর চলছে দেশজুড়ে। এছাড়া এবারের স্বাধীনতা দিবস দেশবাসীর কাছে বিশেষভাবে আরো আনন্দের। কারণ স্বাধীনতার পর ভারত সরকারের কৃতিত্ব এবাবরই প্রথম স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হচ্ছে জম্মু-কাশ্মীরে। চারদিকে প্রচুর নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রদান করা হয়েছে। স্বপ্ন স্বার্থক হল ভারতকেশরী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের আজীবনের লড়াই, চিরাকাংক্ষিত স্বপ্ন!
আর এই দিনেই স্বাধীনতা দিবসের আগেই জন্ম নিয়েছিলেন কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য। সালটা ১৯২৬। আজ কবির ৯৪তম জন্মদিন। কি আশ্চর্য! মাত্র ২১ বছর বয়সে চলে গেলেন তিনি পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে। সালটা কত জানেন? সেই ১৯৪৭! প্রকৃত স্বাধীনতা বোধহয় তিনি পেয়েছিলেন।
জাতীয়তাবাদী নেতা,আধ্যাত্মিক সাধক ঋষি অরবিন্দ ঘোষেরও আজ ১৪৮তম জন্মদিবস। একইসঙ্গে স্বাধীনতা দিবস। আজকের দিনেই দেশ স্বাধীন হবে, এমনটা কি তৈরিই ছিল আগের থেকে। না হলে আজকের দিনেই জন্ম নেবেন ইতিহাসের সেরা ব্যক্তিত্বরা!
কলম চালিয়ে প্রগতিশীল কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য ছিন্ন-ভিন্ন করেছেন অন্যায়ের মেরুদণ্ড।
নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলে সুকান্ত হয়ে উঠেছিলেন বিদ্রোহী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, ৪৩ সালের মন্বন্তর, ফ্যাসিবাদি আগ্রাসন, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রভৃতির বিরুদ্ধে তাঁর কলম শাণিত হয়ে উঠেছিল। একাধারে বিপ্লবী ও স্বাধীনতার আপোসহীন সংগ্রামী কবি সুকান্ত ছিলেন কমিউনিষ্ট পার্টির সর্বক্ষণের কর্মী।
ছাড়পত্রের কবি জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৯২৬ সালে ফরিদপুরে। কিশোরকবি তাঁর অগ্নিদীপ্ত সৃষ্টি প্রণোদনা দিয়ে সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করতে প্রয়াসী ছিলেন।
গণমানুষের কবি সৃষ্টি করেছিলেন কবিতার এক নতুন যুগ। ‘ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি’।
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য মাত্র ২১ বছর বয়সে পরলোকগমন করেন। কিন্তু মানুষ যা শত বছরেও পৃথিবীকে দান করতে পারেন না, তা তিনি করে গেছেন মাত্র জীবনের ২১ বছরে।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশসহ তৎকালীন বড় বড় কবির মাঝে জ্বলজ্বল করছে সুকান্ত ভট্টাচার্যের নাম।
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের পাশাপাশি দেশের মহান ব্যক্তিত্ব অরবিন্দ ঘোষ সম্পর্কে দু-চারটি কথা শুনে নিন। হয়তো আপনাদের তা জানা, কিন্তু আজকের দিনে এই মানুষদের শ্রদ্ধা জানালেই যে পাওয়া যাবে আসল স্বাধীনতার স্বাদ।
# ঋষি অরবিন্দ ঘোষ পড়াশুনা করেছেন কেমব্রিজের কিংস কলেজে। সেখান থেকে ফিরে এসেই ব্রিটিশ শাসনের উপর লেখালেখি শুরু করেন। ব্রিটিশ যুগে ফল যা হবার তাই হল! যেতে হল জেলে।
# জেলে তাঁর জীবনে বহু পরিবর্তন আসে। ধার্মিক মনোভাবাপন্ন হয়ে পড়েন তিনি।
# সাহিত্যিক অরবিন্দ ঘোষ মোট ৩২ খানা গ্রন্থ লিখেছিলেন। যার মধ্যে ৬টি ছিল বাংলা ভাষায়।
# উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হল,ভারতের নবজন্ম, কারাকাহিনি, ধর্ম ও জাতীয়তা এবং অরবিন্দের পত্র।
# অরবিন্দের রাজনৈতিক আদর্শ ও কর্মপন্থার তিনটি দিক ছিল: এক. গুপ্ত বৈপ্লবিক প্রচারকার্য চালানো এবং সশস্ত্র বিদ্রোহের প্রস্ত্ততি হিসেবে সংগঠন গড়ে তোলা; দুই. সমগ্র জাতিকে স্বাধীনতার জন্য প্রস্ত্তত করার উদ্দেশ্যে প্রচারকার্য চালানো এবং তিন. অসহযোগ ও প্রতিরোধের মাধ্যমে বিদেশি শাসনের বিরুদ্ধে জনগণকে সংগঠিত করা।