সম্প্রতি মডেল ঊষসী নির্যাতনের ঘটনা সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। রাতের অন্ধকারে এ কোন তিলোত্তমা নগরীর পরিচয় পেলাম আমরা ?
খোদ কলকাতার রাস্তায় প্রাক্তন ‘মিস ইন্ডিয়া’ ঊষসী সেনগুপ্ত হেনস্থা !
শ্লীলতাহানির ঘটনায় বহু বাহানার পর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে লালবাজার। কলকাতা পুলিশের এক জন ডিসির নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে ।
ঊষসীর অভিযোগ, ১৮ জুন রাতে দুষ্কৃতীদের হাতে হেনস্থা হওয়ার সময় তিনি পুলিশের কোন সাহায্য পাননি। বরং ময়দান, ভবানীপুর ও চারু মার্কেট থানায় তাঁকে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে।
সেই রাতে পুলিশের কোনও গাফিলতি ছিল কি না তা খতিয়ে দেখবে তদন্ত কমিটি।
তা ছাড়াও, চারু মার্কেট থানায় ঊষসী ও উব্রের চালকের যে বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে, তা-ও শুনবে তদন্ত কমিটি। তদন্ত করা হবে পুরো বিষয়টি । দেখা হবে ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ।
উল্লেখ্য, রাতে যে উবরে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন, এক্সাইড মোড় থেকে গাড়ি এলগিন রোডের দিকে যেতেই একটি বাইক এসে উব্রে ধাক্কা মারে।
ধাক্কা মারার পাশাপাশি চালককে মারধর করা এমনকি বেশ কয়েক কিলোমিটার ধাওয়া করে এসে ঊষসীকে গাড়ি থেকে টেনে নামানোর চেষ্টাও করে উন্মত্ত একদল যুবক । হাত থেকে ছিনিয়ে নিতে চেষ্টা করে মোবাইল ।
তিনি অভিযোগ করেছেন, পুলিশের কাছে জানাতে গেলে এটা এই থানার বিষয় নয় বলে এড়িয়ে যাওয়া হয় ।
চারু মার্কেট থানায় অভিযোগ জানাতে যান ঊষসী । কিন্তু থানার সাব- ইন্সপেক্টর দাবি করেন, ভবানীপুর থানায় গিয়ে অভিযোগ জানাতে হবে।
বাধ্য হয়ে তিনি তখন প্রতিবাদ করেন বলে জানিয়েছেন ঊষসী।
রাত দেড়টার সময় থানায় কেন কোনও মহিলা অফিসার ছিল না, সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ঊষসী লিখেছেন, ‘‘আমি গাড়ি থেকে নেমে ভিডিয়ো করতে শুরু করি। দৌড়ে ময়দান থানায় যাই। এক অফিসার দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি বলেন, ওটা ভবানীপুর থানার ঘটনা। আমি হাতজোড় করে অনুরোধ করি, আপনি চলুন, না হলে ড্রাইভারকে মেরে ফেলবে। উনি গিয়ে ওদের বলেন, ঝামেলা করছ কেন? ওরা অফিসারকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। সব কিছু মিটে যাওয়ার পর ভবানীপুর থানা থেকে দু’জন অফিসার গিয়েছিলেন’।
প্রাক্তন মিস ইণ্ডিয়া প্রশ্ন তুলেছন, ‘কীভাবে একদল যুবক কলকাতার রাস্তায় হেলমেট ছাড়া বাইক নিয়ে এভাবে ঘুরতে পারে’?
দ্বিতীয়ত, ‘অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গেলেও প্রতিবাদীকে আক্রান্ত হতে হবে। অথচ একশো মিটার দূরের থানা থেকে বলা হবে, ঘটনাস্থল তাঁদের এলাকায় নয়। এর পরে কি আর কেউ এমন পরিস্থিতিতে অন্যকে সাহায্যে করার সাহস পাবে’ ?
এই ঘটনা ঠিক যেন এনআরএস কাণ্ডেরই পুনরাবৃত্তি। প্রথমে অভিযোগকে গুরুত্ব না দেওয়ার অভিযোগ উঠলেও দেরিতে নড়েচড়ে বসল পুলিশ।
পুলিশ এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে।
ধৃতেরা হল— শেখ রাহিত, ফারদিন খান, শেখ সাবির আলি, শেখ গনি, শেখ ইমরান আলি, শেখ ওয়াসিম, আতিফ খান।