গুয়াহাটিঃ যা আপনার কাছে নিছক একটি খেলনা, নির্বোধ শিশুটির কাছে তা একেবারেই নয় ফেলনা। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুরের (North Dinajpur in West Bengal) চোপড়া থানার কাজিগছের আহমেদ রেজা ট্ৰেনের কামরায় সর্বক্ষণ খেলনা নিয়ে খেলতে ব্যস্ত ছিল। কিন্তু ট্ৰেন থেকে নামার সময় তাড়াহুড়োতে সেই খেলনাই (Toy car) রয়ে গেল ট্ৰেনের কামরায়। প্ৰিয় খেলনা হারিয়ে কেঁদে ভাসিয়ে দিল মা বাবার কোল। কিন্তু উপায় হীন মা বাবা। ফেলে আসা খেলনা ততক্ষণে ট্ৰেনে (Secunderabad-Agartala special Train-07030) করে কত দূর চলে গিয়েছে কে জানে!
মোহিত রেজা (Mohit Reza) এবং নাসরিন বেগম (Nasrin Begum) দম্পতির ফেলে যাওয়া খেলনা তাঁরা নেমে যাওয়ার পর তা নজরে পড়ে ভূষণ পট্টনায়ক (Bhuson Patnayak) নামের এক সহযাত্ৰীর। ১৩৯ নম্বরে ‘রেল মদত’এ (Railway helpline no. 139) ফোন করে কামরা এবং আসনের নম্বর জানিয়ে ভূষণ পট্টনায়ক রেল প্ৰশাসনের (Railway authority) কাছে আর্জি জানান যদি কিছু করা যায়। শিশুটিকে যদি ফিরিয়ে দেওয়া যায় সেই খেলনা।
কিন্তু সহযাত্ৰীর নাম ঠিকানা কিছুই তো জানা ছিল না তাঁর। তা সত্ত্বেও ফোন পেয়ে রেলের তরফে প্ৰথমে যেটা করা হয় তা হল ওই দম্পতির ফেলে যাওয়া খেলনা ট্ৰেন নিউ জলপাইগুড়ি (New Jalpaiguri) পৌঁছতেই সেখান থেকে নামিয়ে নেওয়া হয়। তারপর শুরু হয় খেলনার মালিকের খোঁজ। কিন্তু সে কাজ মোটেও সহজ ছিল না। খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায় সেকেন্দ্ৰাবাদ (Secunderabad) থেকেই বুক করা হয়েছিল Ticket।
রেল-কর্তারা জানিয়েছেন সেই টিকিটের থেকে ‘রিকুইজিশন স্লিপ’ খুঁজে পাওয়া কঠিন ছিল। কিন্তু তা ঘেঁটে পাওয়া গেল মোহিতদের ঠিকানা এবং যোগাযোগ নম্বর। যোগাযোগ করা হল তাঁদের সঙ্গে। অবশেষে শুক্ৰবার সেই খেলনা রেলের তরফ থেকে পৌঁছে দেওয়া হল আলুয়াবাড়ি থেকে ২০ কিলোমিটার দূরের কাজিগাঁওয়ে সেই শিশুর হাতে। ট্ৰেনে ফেলে আসা খেলনা পেয়ে শিশুর মুখে হাসি আর থামছে না। আলুয়াবাড়ি রোড স্টেশনের আরপিএফ অফিসার বিপ্লব দত্তের (RPF Officer Biplab Dutta) নেতৃত্বে RPF-এর একটি দল গিয়ে খেলনা দিয়ে এসেছেন। এখনও ভাল বেঁচে আছে বলে চলছে এই পৃথিবী, তারই প্ৰমাণ এই ঘটনা।