পঞ্চসায়র থানা এলাকার নৃশংস ঘটনা নাড়া দিয়ে গেছে সমগ্র পশ্চিমবঙ্গকে।
৩৫ বছরের নির্যাতিতা মেয়েটি একটি বৃদ্ধাবাসে বসবাস করতেন। ঘটনার পূর্ণ তদন্তে নেমে পুলিশ কাছে যে তথ্য এল, তা হচ্ছে, সেই তরুণীর বাস করা আবাসটির নেই কোন নথিভুক্তি।
ওই মহিলা, তাঁর বৃদ্ধা মা ছাড়া এবং আরও ১০ জন আবাসিক থাকলেও সেখানে রাখা হয়নি কোনও নামের খাতা।
শুধু তাই নয়, আরো হাজারো অভিযোগ পাওয়া গেছে সেই আবাসের বিরুদ্ধে। সেখানে রাতবিরেতে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে নেই কোন চিকিৎসক, আয়া।
কিছুটা মানসিকভারসাম্যহীন ওই মহিলা রাতে বাইরে যাওয়ার সময় গেটে ছিল না কোন দারোয়ান!
এমন নিদারুণভাবেই এলাকায় মোট ১১টি বৃদ্ধাবাস চালাচ্ছেন হোমের মালিক হরেকিশোর মণ্ডল। সবগুলিরই নাম, ‘সেবা ওল্ড এজ হোম’!
পুলিশি জেরায় হরেকিশোরবাবু মুখ খুলতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি জানান, তাঁর সব বৃদ্ধাবাসে দেড়শো জন মানুষ থাকেন।
বিতর্কিত বৃদ্ধাবাসটি কোথাও নথিভুক্তহীনভাবে দীর্ঘ ২ যুগেরও বেশি অর্থাৎ ২৫ বছর ধরে চালাচ্ছেন মাত্র ৩ জন কর্মীকে নিয়ে।
গেটে দারোয়ান নেই, বয়স্কদের দেখাশোনা করার কেউ নেই। নিপীড়িতা মহিলা রাতে কখন নিজের অজান্তে বেরিয়ে গিয়েছেন তা কর্মীদের ঘুণাক্ষরেও টের নেই!
ঘটনা প্রসঙ্গে নারী শিশুকল্যাণ ও সমাজকল্যাণ দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, ওই বৃদ্ধাবাসে এ দিন দফতরের আধিকারিকেরা গিয়েছিলেন। দেখা গেছে, কোনরকম নিয়ম না মেনে ২৫ বছর ধরে এভাবে বৃদ্ধাবাস চালাচ্ছেন উক্ত মালিক।
সমাজকল্যাণ দফতরের কর্তা বলেন যে, “নির্দিষ্ট কিছু মাপকাঠি মানতে হয়। বৃদ্ধাবাস বলে সেখানে উনচল্লিশ বছরের কোনও মহিলাকে রাখা যায় না। সমস্ত তথ্য যাচাই করে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই বৃদ্ধাবাসের মালিক অবশ্য বলছেন, ‘‘আমরা মানুষের সেবা করছি। কোথায় নথিভুক্ত করাতে হয় জানতাম না।’’
প্রসঙ্গত, সোমবার সারা রাত তরুণীকে গাড়িতে তুলে ঘণধর্ষণ চালায় দুই পাষণ্ড। রক্তাক্ত অবস্থায় ৩৫ বছরের নির্যাতিতা মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয় সোনারপুর স্টেশন থেকে।
ধর্ষক দুজনের বিরুদ্ধে পঞ্চসায়র থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন মেয়েটির পরিবারের লোকজন।
নিগৃহীতা মেয়েটি পুলিশকে জানিয়েছেন, সারা রাত তাঁকে গণধর্ষণ চালিয়েছে দুই নির্যাতক। এরপর অচৈতন্য অবস্থায় তাঁকে গাড়ি থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ায় মাথায় গুরুতর চোট পেয়ে জ্ঞান হারান তিনি।
কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান মুরলিধর শর্মা বলেন, ‘‘একটি গণধর্ষণের মামলা রুজু হয়েছে। তবে ঠিক কী ঘটেছিল, সে বিষয়ে তথ্য পেতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।’’ কারণ তরুণী আতংকে বর্তমানে কোন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই।