জন মেকলে বলেছিলেন “প্রচুর বই নিয়ে গরীব হয়ে চিলেকোঠায় বসবাস করব তবু এমন রাজা হতে চাই না যে বই পড়তে ভালবাসে না”। একেবারে সত্যি। যে ঘরে বই নেই, সে ঘর প্রাণহীন।
বই পড়ে এমনই অভিলেখ সৃষ্টি করলেন মুর্শিদাবাদের মহিলা মধুমিতা মজুমদার। তিনি এক বছরে অর্থাৎ ২০১৮ সালে ২৬৬টি বই পড়ে মুর্শিদাবাদ জেলার সেরা পাঠক নির্বাচিত হয়েছেন।
তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেন গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি।
এবারই যে প্রথম বছরের ‘সেরা পাঠক’ নির্বাচিত হলেন তা নয়। ২০১৭ সালেও এ পুরস্কার লাভ করেছিলন ৪৯ বছরের মধুমিতা দেবী। সেবার তিনি পড়েছিলেন মোট ২৪২ টি বই। ২০১৮ সালে সে সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৬৬টি।
২০০৭ সাল থেকে বই পড়ার তীব্র নেশা মনকে পাগলপ্রায় করে তোলে। সঙ্গে সঙ্গে সুতির বংশবাটি ইউনিয়ন রুরাল লাইব্রেরির সদস্য হিসেবে নাম লিখিয়ে ফেললেন। তাঁর সদস্য নম্বর ২৯৪।
মধুমিতা মজুমদার জানিয়েছেন, তাঁদের অভাবের সংসার হলেও বই পড়ার নেশা, বইয়ের কালো কালো অক্ষরগুলো তাঁর সমস্ত যন্ত্রণা ভুলিয়ে দেয়।
সংসার সামলে এক মুহূর্ত সময় তিনি নষ্ট করেননা। বাকিরা যখন একসঙ্গে গোল হয়ে রীতি অনুযায়ী সমালোচনা, নিন্দা, পরচর্চায় নিজেদের ডুবিয়ে রাখে, সে সময় মধুমিতা দেবীকে দেখা যাবে তিনি একান্তে বইয়ের পাতায় মুখ গুঁজে রয়েছেন।
ফলে তাঁর মন সুস্থ, দেহ সুস্থ! সুস্থ মনে সুচারুভাবে চালিয়ে নিচ্ছেন সংসার। টাকা-পয়সা কম থাকলেও সংসারে শান্তির অভাব নেই। কারণ শান্তি তখনই আসে, যখন পরিবারের সদস্যরা শিক্ষিত মানসিকতার হয়। একজন ভুল করলেও অপরজন সূক্ষ্মভাবে সে ভুলগুলো ধরিয়ে দিতে পারেন।
সুতরাং সমস্ত পরনিন্দা, পরচর্চা, অযথা সময় নষ্ট করা প্রভৃতি বাদ দিয়ে আজ থেকেই বই পড়ার অভ্যেস গড়ে তুলুন, এবং পরবর্তী প্রজন্মের জন্যে রেখে যান একটি সুন্দর জীবন।