ডিলিট উপাধি পেলেন নোবেলজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রবল ছাত্র বিক্ষোভের মাঝে তাঁর হাতে তুলে দেয়া হয় সম্মাননা।
গতকাল, ২৮শে জানুয়ারি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কেও ছাড়িয়ে গেছে।
রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের গাড়ি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পৌঁছে যায়। কিন্তু প্রায় মিনিট দশেক তিনি গাড়ি থেকে নামতে পারেননি বিক্ষোভের জেরে। তাঁর গাড়ি ঘেরাও করে চারদিকে বসে থাকে বিক্ষোভরত পড়ুয়ারা।
এমন নোংরামো আর কোথাও পরিলক্ষিত হয়নি বলেই মন্তব্য করেছেন সমাবর্তনে উপস্থিত হওয়া বিশিষ্ট পদাধিকারী কয়েকজন।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন, এনপিআর এবং এনআরসির বিরোধিতায় মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় গমগম করতে থাকে।
সমাবর্তন উপলক্ষে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় তথা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যকে নজরুলমঞ্চে পৌঁছেও পড়ুয়া বিক্ষোভের জেরে অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হয়েছে।
নোবেলজয়ী অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় পৌঁছে গিয়েছেন সমাবর্তনস্থলে। পড়ুয়াদের মুখে তখনও স্লোগান, ‘গো ব্যাক ধনখড়’, ‘ওয়েলকাম অভিজিৎ’।
বিক্ষোভী পড়ুয়ারা মঞ্চের বাইরেই শুধু নয়, নজরুল মঞ্চের ভিতরে প্রবেশ করে রীতিমতো উত্তপ্ত করে তোলে পরিবেশ। তাঁদের শান্ত করতে মঞ্চে উঠে আসেন উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়। পড়ুয়াদের বার বার অনুরোধ করতে শোনা গেল তাঁকে। তাঁদের সঙ্গে একাধিক বার কথা বলেছেন তিনি। শেষমেশ পড়ুয়াদের দেওয়া শর্তের ভিত্তিতেই সমাবর্তন অনুষ্ঠান শুরু হল। নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে সাম্মানিক ডি লিট তুলে দিলেন উপাচার্য। সমস্ত ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া শিক্ষা মহলে।
কলকাতার সমাবর্তন মঞ্চে উঠতে পারেননি রাজ্যপাল জগদীপ। কিন্তু তাঁর সই করা শংসাপত্র দেওয়া হল অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্যান্যদের।
পিছনের গ্রিন রুমে অভিজিৎবাবুকে পাশে নিয়েই শংসাপত্রে সই করেন আচার্য জগদীপ। সোনালিদেবীও ছিলেন উক্ত ঘরে।
রাজ্যপাল টুইট করে বলেন, “উপাচার্য আমার থেকে অনুমতি নিয়েই এই অনুষ্ঠান করেছেন। কারণ এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা সম্মান জড়িয়ে রয়েছে।”
অভিজিৎবাবুকে সম্মান জানাতে পেরে তিনি যথেষ্ট গর্বিত এবং আনন্দিত বলে জানান রাজ্যপাল।
নজরুল মঞ্চে উপস্থিত একজন শিক্ষাবিদ ছাত্র বিক্ষোভের এই নমুনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে আমরা ১৯৬৮ থেকে ’৭১ অনেক আন্দোলন করেছি। কিন্তু, এ ভাবে প্রতিবাদ দেখানোটা কোনও ভাবেই সৌজন্যের মধ্যে পড়ে না।’’