উদীয়মান দুই যুবক-যুবতী সড়কের মাঝখানে পড়ে আছেন মুখ থুবড়ে। চারদিকে রক্ত! কিন্তু দুজনের মধ্যে কারো মাথাতে ছিল না হেলমেট। পাশেই ভাঙাচোরা বাইকটি পড়ে আছে।
ভয়ংকর এই ঘটনাটি সংঘটিত হয় শনিবার কলকাতা ইএম বাইপাসের বেঙ্গল কেমিক্যাল মোড়ের কাছে ।
বান্ধবী মনীষার ১৮তম জন্মদিনের রাতে কলকাতা ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন তাঁর বন্ধু অভিষেক রায় (২১)। মনীষা তাঁর খুড়তুতো বোন বিপাশাকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে।
অভিষেক মধ্যরাতে মদ্যপানও করেন। তারপর তিনজন সারা কলকাতা চষে বেড়াতে থাকে। ভূতনাথ মন্দিরের কাছে মত্ত অভিষেক মনীষা রায় এবং বিপাশাকে নিয়ে বাইক থেকে পড়তে পড়তে বেঁচে গেছেন। তাঁদের কারোরই মাথায় ছিল না হেলমেট। অভিষেকের এই কর্মকাণ্ড দেখে বিপাশা আর যেতে চান না। ফলে তাঁকে উল্টোডাঙ্গায় নামিয়ে দেয়া হয়। বিপাশার ভাগ্য হয়তো ভাল ছিল, তাই সে নেমে গেছে।
কিন্তু এদিকে মদ খাওয়া অন্যদিকে বেপরোয়াভাবে বাইক চালানো! অভিষেক টাল সামলাতে পারেন না।
দুর্ঘটনাস্থলটি মানিকতলা থানার অন্তর্গত। সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, বেলাগাম গতিতে বাইক ছুটিয়ে যাচ্ছিলেন অভিষেকরা। বেঙ্গল কেমিক্যাল মোড়ের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডারের রেলিংয়ে ধাক্কা মারে বাইকটি। দু-জন দুপাশে ছিটকে পড়েন।
স্থানীয়রা তাঁদের দেখা মাত্র দুর্ঘটনাস্থল থেকে মনীষা এবং তাঁর বন্ধু অভিষেক রায়কে (২১) উদ্ধার করে বাইপাসেরই এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা।
রাতে হাসপাতালেই মারা যান অভিষেক। চিকিৎসকেরা জানান, ওই তরুণ মত্ত অবস্থায় ছিলেন। তাঁর মাথায় গুরুতর চোট লেগেছিল। অভিষেকদের বাড়ি আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রোডে। বাবা এবং ঠাকুমার সঙ্গে থাকতেন তিনি।
এদিকে মনীষা রায়ের মাথাতেও প্রচণ্ড চোট লেগেছে। কোমর এবং ঘাড়ের হাড় ভেঙে গিয়েছে। সংবাদ লেখা অবধি কোন খবর পাওয়া যায়নি তাঁর।
কলকাতার রাস্তায় প্রতি রাতে প্রতিনিয়ত নাকা চেকিংয়ে হেলমেট না নিয়ে বাইক চালিয়ে কয়েক হাজার বাইক চালক এবং আরোহী আটক পড়েছেন।
এত সচেতনতার পরও কিভাবে মত্ত অবস্থায় হেলমেট না পড়ে আরোহীরা বাইক রাইড করে সেটাই এখন প্রশ্ন!