প্রবাদ আছে জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ সবই জানে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ সবই জানেন, কিন্তু তা কতটুকু যে শুদ্ধ, সেটা হয়তো তিনি নিজেও বলতে পারবেন না।
আজ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশততম জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে রাজ্য জুড়ে।
মঙ্গলবার বিদ্যাসাগরের জন্মভূমি বীরসিংহ গ্রামে মুখ্যমন্ত্রী ঈশ্বরচন্দ্রের জন্মদিন পালনের অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে ভাষণ দিতে গিয়ে বিদ্যাসাগরকেই মাইলস্টোনের আবিষ্কর্তা বলে বসলেন!
শুধু কী এখানেই শেষ? তা নয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা আরও বলেন, ‘‘বিদ্যাসাগর জ্যোতির্বিজ্ঞানেও পারদর্শী ছিলেন!”
Inauguration of year-long programmes on the occasion of Iswar Chandra Vidyasagar's 200th birth anniversary | বিদ্যাসাগরের ২০০ তম জন্মদিবস উপলক্ষ্যে এক বছর ব্যাপী অনুষ্ঠানের সূচনা #5
Posted by Mamata Banerjee on Tuesday, September 24, 2019
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভুল এবারই প্রথম নয়। বাংলায় এনআরসি কোন মতেই হতে দেবেন না, বিজেপির বিরুদ্ধে গত ১২ সেপ্টেম্বর প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন মাননীয়া। শ্যামবাজারর মঞ্চে দাঁড়িয়ে বৌদ্ধধর্মের ত্রিশরণ মন্ত্র আওড়াতে গিয়ে ফের করে বসলেন ভুল!
“বুদ্ধং শরণং গচ্ছামিঃ ধম্মং শরণং গচ্ছামিঃ সঙ্ঘং শরণং গচ্ছামি” মন্ত্রোপাঠ করতে গিয়ে মমতা “ধম্মং” এর স্থানে রীতিমতো বলে বসলেন “শান্তিং শরণং গচ্ছামি”! কি আশ্চর্য!
বাংলায় নবজাগরণের অন্যতম পুরোধা এবং বাল্যবিবাহ রদ ও বিধবাবিবাহ প্রচলনকারী ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মাইলের সেই ঘটনা প্রত্যেক বাঙালির মর্মে গাঁথা।
বাবা ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যাওয়ার সময় মাইল ফলক গুণে গুণে পথ চলতেন বিদ্যাসাগর। সেখান থেকেই বিদ্যাসাগর সংখ্যা চিনেছিলেন।
মমতার নতুন আবিষ্কার মতে ফলক দেখে মাইল আবিষ্কার মোটেও করেননি ঈশ্বরচন্দ্র।
প্রসঙ্গত, প্রাচীন রোমান যুগেও মাইলের অস্তিত্ব ছিল। দূরত্বের সূচক হিসাবে মাইলের উল্লেখ পাওয়া প্রত্যেক দেশেই।
মাইলের পরিমাপকে বলা হয় এক হাজার পেস।
অর্থাৎ রোমান সেনারা কুচকাওয়াজ করার সময় প্রতি পদক্ষেপে যে দূরত্ব পেরোতেন তাকে বলা হত এক পেস। ১ হাজার পেসের সমান ১ মাইল।
মুখ্যমন্ত্রী মমতার এ হেন বক্তব্যে তিতিবিরক্ত হয়ে উঠেছে বাঙালিরা, কেউ আবার মুচকি হাসছে।