নতুন দিল্লি: ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার সঙ্গে যুক্ত বিতর্কিত বিবিসির তথ্যচিত্ৰ (BBC documentary) নিষিদ্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে করা জনস্বার্থ মামলা (PIL) শুনতে রাজি হয়েছে সুপ্ৰিম কোর্ট(Supreme Court)। আগামী সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিতর্কিত বিবিসি ডকুমেন্টারি (BBC Documentary on Prime Minister Narendra Modi) সংক্ৰান্ত মামলাগুলো শুনতে রাজি হয়েছেন ভারতের প্ৰধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্ৰচূড়ের (Chief Justice DY Chandrachud) নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি পি এস নরসিংহ (Justice PS Narasimha) ও বিচারপতি জে বি পর্দিওয়ালা(Justice JB Pardiwala)।
বিষয়টি দ্রুত শোনার জন্য আজ এই বেঞ্চে অনুরোধ জানান মামলা দায়ের করা দুই আইনজীবী এম এল শর্মা ও সি ইউ সিং। তাঁদের এই অনুরোধ মেনে আদালত ঠিক করেন, তাঁরা আগামী সোমবার বিষয়টি শুনবেন।
তথ্যচিত্রটি নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে আরও কয়েকজন মামলা করেছেন। তাঁরা হলেন প্রবীণ সাংবাদিক এন রাম(Veteran Journalist N Ram), আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ(Activist -lawyer Prashant Bhushan) ও তৃণমূল সংসদ সদস্য মহুয়া মৈত্র(Trinamool Congress MP Mahua Moitra)।
অ্যাডভোকেট সি ইউ সিং(Advocate CU Singh) আবেদনে বলেছেন- কেন্দ্রীয় সরকার তথ্য–প্রযুক্তি আইনের বিধি অনুযায়ী (Under IT rules) জরুরি ক্ষমতা প্রয়োগ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে (Social Media) তথ্যচিত্রটি মুছে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে। এই নির্দেশ অনুযায়ী, সাংবাদিক এন রাম ও আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণের টুইট মুছে দেওয়া হয়েছে। অথচ, সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে নির্দেশটি জনসমক্ষে জারি করেনি।
আইনজীবী সি ইউ সিংয়ের আবেদনে বলা হয়েছে, তথ্যচিত্রটি দেখানোর অভিযোগে কলেজছাত্রদের বহিষ্কার করার ঘটনা ঘটেছে। আইনজীবী শর্মার আবেদনে বলা হয়েছে, সরকারের নির্দেশ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, স্বৈরতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক। এই নির্দেশ মৌলিক অধিকার হরণ করছে।
এমএল শর্মার আবেদনে কেন্দ্রের দুই পর্বের ডকুমেন্টারির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করাকে “দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারী এবং অসাংবিধানিক” বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে কেন্দ্ৰীয় আইন মন্ত্ৰী কিরণ রিজিজু (Union Law Minister Kiren Rijiju) আবেদনকারীদের সমালোচনা করে টুইটে লিখেছেন- “এভাবে তারা মাননীয় সুপ্রিম কোর্টের মূল্যবান সময় নষ্ট করে যেখানে হাজার হাজার সাধারণ নাগরিক বিচারের আশায় তারিখ খুঁজছে।’’
জনস্বার্থ মামলায় দেশের শীর্ষ আদালতের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে- তাঁর ২ পর্বের তথ্যচিত্ৰটি দেখুক। প্ৰত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে যাঁরা ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গার জন্য দায়ী, তাঁদের বিরুদ্ধে তাঁরা ব্যবস্থা নিক।
উল্লেখ্য যে গত ২১ জানুয়ারী কেন্দ্রীয় সরকার তথ্য–প্রযুক্তি আইনের বিধি অনুযায়ী জরুরি ক্ষমতা প্রয়োগ করে বিতর্কিত বিবিসি ডকুমেন্টারি “ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোয়েশ্চেন” (India: The Modi Question) এর লিঙ্ক সোশ্যাল মিডিয়ার একাধিক প্ল্যাটফর্ম যেমন ইউটিউব, টুইটার পোস্ট ব্লক করার জন্য নির্দেশ জারি করে।
আইনজীবী শর্মার আবেদনে বলা হয়েছে- ১৯ (১) (২) ধারার অধীনে নাগরিকদের ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গার খবর, তথ্য এবং প্রতিবেদন দেখার অধিকার আছে কিনা সেই সিদ্ধান্ত শীর্ষ আদালতকে(Supreme Court) নিতে হবে।