ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলের রাজ্য গুলিতে মানব পাচারের হার ক্ৰমশ বাড়ছে। সাত কন্যা বা সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যের মধ্যে একটি হচ্ছে মিজোরাম। গত ২২ বছরে মিজোরামে অন্তত ৩৫টি মানব পাচারের মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। ২০০০ সালে মিজোরামে প্ৰথম মানব পাচারের মামলা নথিভুক্ত হয়েছিল।
সরকারি কর্তকর্তারা জানিয়েছেন- এখন পর্যন্ত মিজোরামের মোট ৯৫ জন মানব পাচারের শিকার হয়েছেন। যার মধ্যে ৩৩ জন শিশু।
বেশিরভাগ ভুক্তভোগী বিভিন্ন প্ৰত্যন্ত গ্ৰাম থেকে শহরে চাকরির সন্ধানে এসে মানব পাচারের শিকার হয়েছে। প্ৰত্যেককেই সফলভাবে উদ্ধার করা হয়েছে।
মিজোরামের কর্মকর্তারা বলেছেন যে ২০০০ সাল থেকে মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত ৬৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
মানব পাচার হচ্ছে জবরদস্তি শ্রম, যৌন দাসত্ব, বা পাচারকারী বা অন্যদের জন্য বাণিজ্যিক যৌন শোষণের উদ্দেশ্যে মানুষকে ব্যবহার করা হয়। এটি বিশাল বড় বেআইনি ব্যবসা।
এটি জবরদস্তি বিবাহের মাধ্যমে একজনকে স্ত্ৰীকে দেওয়া বা স্যারোগেসি, ডিম্বাণু সংগ্ৰহের জন্য মেয়েদের পাচার করা, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ বা টিস্যু বের করে নেওয়া এই সব কার্যকলাপ জড়িত থাকে। মানব পাচার হচ্ছে মানুষ, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের বাণিজ্য।
ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও) এর মতে, শুধুমাত্র জোর করে শ্রম (মানব পাচারের একটি উপাদান) ২০১৪ সালের হিসাবে প্রতি বছর আনুমানিক ১৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ($150) মুনাফা তৈরি করে।
২০১২ সালে, ILO -র মতে ২১ মিলিয়ন ভিকটিম আধুনিক দিনের দাসত্বে আটকা পড়েছে।
বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অপরাধ জগত হচ্ছে মানব পাচারের ব্যবসা। এর পিছনে মাদক ব্যবসা এবং অস্ত্র পাচারের মতো কার্যকলাপও জড়িত রয়েছে। গোটা বিশ্বে মানব পাচারের মতো অপরাধজনিত ব্যবসা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে।
২০১৮ এবং ২০১৯ সালের সংস্করণ অনুসারে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের জারি করা বার্ষিক ট্রাফিকিং ইন পার্সন রিপোর্টে বলা হয়েছে- মানব পাচার এবং জবরদস্তি শ্রমের বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদানের ক্ষেত্রে বেলারুশ, ইরান, রাশিয়া এবং তুর্কমেনিস্তান সবচেয়ে খারাপ দেশ। দেশগুলিতে এইধরনের কার্যকলাপ সবচেয়ে বেশি।