আজ বৃহস্পতিবার বিশিষ্ট বাঙালি চিত্র পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের ষষ্ঠ প্রয়াণবার্ষিকী।
২০১৩ সালের আজকের দিনেই মাত্র ৪৯ বছর বয়সে কলকাতায় তিনি প্রয়াত হন।
অবশ্য, ঋতুপর্ণকে শুধু চিত্র পরিচালক বললে কম বলা হবে। তাঁকে এক কথায় প্রতিভা বললেই সবচেয়ে ভালো।
সত্যজিৎ রায়ের পর বাংলা ছবির জগতে যে ক’জন মুষ্টিমেয় পরিচালক দাপিয়ে বেরিয়েছেন, তাঁদের অন্যতম হলেন ঋতুপর্ণ ঘোষ।
সত্যজিৎ রায় ও মৃণাল সেনের ধারক ও বাহক ছিলেন তিনিই।
একটি বিজ্ঞাপন সংস্থার ক্রিয়েটিভ আর্টিস্ট হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়।
১৯৯০ সালে তিনি সিনেমা তৈরির দিকে ঝোঁকেন। তাঁর পরিচালনায় তৈরি প্রথম চলচ্চিত্র হল ‘হীরের আংটি’ শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের লেখা উপন্যাস অবলম্বনে। ১৯৯২ সালে এটি মুক্তি পায়।
দ্বিতীয় ছবি ‘উনিশে এপ্রিল’ মুক্তি পায় ১৯৯৪ সালে। এই ছবির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ কাহিনিচিত্র বিভাগে জাতীয় পুরস্কার পান।
পরে ১৯৯৭ সালে মুক্তি পায় ছবি ‘দহন’। এটিও পুরস্কার পেয়েছিল। ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত অন্যান্য বিখ্যাত ছবিগুলি হল ‘রেইনকোট’, ‘অন্তর মহল’, ‘চিত্রাঙ্গদা’, ‘তিতলি’, ‘খেলা’, ‘সব চরিত্র কাল্পনিক’, ‘বাড়িওয়ালি’, ‘অসুখ’, ‘উৎসব’, ‘শুভ মহুরত’, ‘আবহমান’, ‘চোখের বালি’ ইত্যাদি।
মৃত্যুর আগে তাঁর পরিচালিত শেষ ছবি ছিল ‘সত্যান্বেষী’।
পরিচালনার পাশাপাশি তিনি অভিনয় করতেও ভালোবাসতেন। ওড়িয়া ছবি ‘কথা দেইথিলি মা কু’-তে তিনি অভিনয় করেন। এ ছাড়া ‘আর একটি প্রেমের গল্প’, ‘মেমোরিজ ইন মার্চ’, ‘চিত্রাঙ্গদা’ ইত্যাদি সিনেমাতেও অভিনয়-প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গিয়েছেন।
লেখালিখি করতেও ভালোবাসতেন ঋতুপর্ণ ঘোষ। ‘আনন্দলোক’ এবং ‘সংবাদ প্রতিদিন’ পত্রিকার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।
দুই দশকের কর্মজীবনে তিনি বারোটি জাতীয় পুরস্কারের পাশাপাশি কয়েকটি আন্তর্জাতিক পুরস্কারও পেয়েছিলেন।
১৯৬৩ সালের ৩১ আগস্ট কলকাতায় ঋতুপর্ণ ঘোষের জন্ম হয়। তাঁর বাবা-মা উভয়েই চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বাবা সুনীল ঘোষ ছিলেন তথ্যচিত্র-নির্মাতা ও চিত্রকর। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ডিগ্রি লাভ করেন।