‘পৃথিবী আমারে চায়, রেখো না বেঁধে আমায়, খুলে দাও প্রিয়া, খুলে দাও বাহুডোর’। এত ভালবেসেও তো জগতবাসী ধরে রাখতে পারল না। পৃথিবীর আমন্ত্রণে এসেছিলেন, পৃথিবীর আমন্ত্রণেই চলে গেলেন ।
কিন্তু মহানায়ক উত্তম কু্মার রয়েছেন আপামর বিশ্ববাসীর মনে ।
অরুণকুমার চট্টোপাধ্যায়কে বাঙালি যতটা না চেনে, উত্তম কুমার বলতেই দুকানে হাত চলে যায় । তিনি যে গুরু ! গুরুর নাম কি এমনি এমনি নেয়া যায় ?
ভারতীয় বাঙালি চলচ্চিত্র অভিনেতা, চিত্র প্রযোজক একইসঙ্গে পরিচালক মহানায়ক উত্তম কুমারের আজ ৩৯তম মৃত্যুবার্ষিকী ।
কলকাতার পোর্টে একটি সামান্য চাকরি নিয়েকর্মজীবন শুরু করা সেই নিতান্ত ক্ষুদ্র মানুষটি আজ ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের একটি দিকপাল, একটি যুগ । উত্তম-সুচিত্রা মানেই বাংলা ছবির জগতে একটি যুগ । সেই যুগের পূর্ব ও পশ্চাৎ জুড়ে চলেছে অভিনয়ের জগত ।
সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে চলচ্চিত্র জগতে প্রতিষ্ঠা পেতে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে মহানায়ককে । মাটি খামছে ধরে ছিলেন তিনি । চলচ্চিত্রের মাটি থেকে একটি বারের জন্যেও নিজেকে আলাদা করেননি ।
সেই ভঙ্গিমা, সেই চোখের চাউনি, সেই ভুবনভোলানো হাসি আপামর বাঙালি তথা বিশ্ববাসীর মনে গেঁথে থাকবে চিরকাল ।
উত্তম-কুমারের প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘দৃষ্টিদান’। এর আগে অবশ্য তিনি ‘মায়াডোর’ নামক এক চলচ্চিত্রে কাজ করেছিলেন।কিন্তু সে ছবি মুক্তিলাভ করেনি ।
‘সাড়ে চুয়াত্তর’ মুক্তিলাভের সঙ্গে সঙ্গে তিনি চলচ্চিত্র জগতে স্থায়ী আসন লাভ করেন । এবং বাংলা চলচ্চিত্রের পৃথিবীতে সফল উত্তম-সুচিত্রা জুটির সূত্রপাত হয় ।
মহানায়ক উত্তম কুমারের প্রয়াণ দিবসে আমরা দেখে নেব ১৯৮০ সালের ২৪ জুলাইয়ের সেই মর্মান্তিক দিনে আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত সত্যজিৎ রায়ের চোখে মহানায়ক ‘অস্তমিত নক্ষত্র’ নিবন্ধটি ।
১৯৫৭ সালে অজয় কর পরিচালিত উত্তম কুমার অভিনীত ‘হারানো সুর’ পেয়েছিল রাষ্ট্রপতির ‘সার্টিফিকেট অব মেরিট’। ছবির প্রযোজক ছিলেন স্বয়ং মহানায়ক।
‘দেয়া নেয়া’ ছবির সেই বিখ্যাত উক্তি আজো কানে বাজে, ‘টাকাই জীবনের সবকিছু নয়’। সেই সঙ্গে জীবনের এক অসাধারণ সংগীত ।
‘জীবন খাতার প্রতি পাতায়, যতই করো হিসাবনিকাশ, পূর্ণ হবে না’।