ঢাকা: রাশিয়া জেনেশুনে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা জাহাজ পাঠিয়েছে বলে জানালেন বাংলাদেশে (Bangladesh) বিদেশমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে তাজ্জব লেগেছে যে রাশিয়া জেনেশুনে নিষেধাজ্ঞা আছে—এমন জাহাজের নাম পরিবর্তন করে দেশের উত্তরের জেলা পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পণ্য পাঠিয়েছে। আমরা এটি আশা করিনি। আজ রবিবার ঢাকায় বিদেশ মন্ত্রকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন।
বিদেশমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আশা করি, রাশিয়া এখন নিষেধাজ্ঞা নেই এমন জাহাজে করে বাংলাদেশে (Bangladesh) পণ্য পাঠাবে। আব্দুল মোমেন জানান, রাশিয়ার ৬৯টি জাহাজ যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে। এর বাইরে তাদের কয়েক হাজার জাহাজ আছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে বলে উল্লেখ করে মোমেন বলেন, ‘আমরা রাশিয়াকে বলেছি, তাদের যেসব জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে, সেগুলো ছাড়া অন্য যেকোনো জাহাজে পাঠাতে পারে। নিষেধাজ্ঞা আছে, এমন জাহাজ আমরা গ্রহণ করতে চাই না।’
মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় থাকা ‘উরসা মেজর’ নামের একটি জাহাজে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জাম পাঠিয়েছিল রাশিয়া গত ১৯ ডিসেম্বর।রাশিয়ার পতাকাবাহী জাহাজটির গত ২৪ ডিসেম্বর খুলনার মোংলা বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। তার আগেই ২০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে জানানো হয়, জাহাজটি আসলে ‘উরসা মেজর’ নয়— এটি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা ‘স্পার্টা-৩’ জাহাজ।
এরপর ঢাকার অনুমতি না পেয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জাম খালাস না করেই ভারতের জলসীমা ছেড়ে চলে যায় ‘উরসা মেজর’।প্রায় দুই সপ্তাহ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পণ্য খালাসের জন্য অপেক্ষা করেছিল জাহাজটি।
কিন্তু পণ্য খালাসের জন্য জাহাজটি নয়াদিল্লির অনুমতি পেতেও ব্যর্থ হয়। এ অবস্থায় ১৬ জানুয়ারি ভারতের জলসীমা ছেড়ে যায় জাহাজটি। সেদিনই (১৬ জানুয়ারি) রাশিয়ার পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে জানানো হয়, উরসা মেজরের পরিবর্তে এখন অন্য জাহাজে করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জাম বাংলাদেশে পাঠানো হবে।
উরসা মেজরের হলদিয়া বন্দরে পণ্য খালাসের কথা ছিল। কিন্তু হলদিয়া বন্দরে পণ্য খালাস না করে জাহাজটির ফিরে যাওয়ার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী বিদেশমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর সাম্প্রতিক সফরের যোগসূত্র রয়েছে। সম্প্রতি ডোনাল্ড লু ভারত ও বাংলাদেশ সফর করেন।