আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি, স্বামী রিফাত হত্যা মামলায় প্রদান করা জবানবন্দী ফিরিয়ে নিতে আগ্রহী।
তিনি এবং তাঁর বাবা বরাবরই জানিয়ে আসছেন, মিন্নির কাছ থেকে জোরপূর্বক জবানবন্দি নেয়া হয়েছে, ঘটনায় জড়িত প্রভাবশালীদের বাঁচানোর জন্যে। কিন্তু কে সেই প্রভাবশালী ব্যক্তি, এই কথা উল্লেখ করেননি মিন্নির বাবা।
এমনকি শুধু যে সিদ্দিকার বাবাই এমন দাবি করেছেন তা নয়, মিন্নির শাশুড়ি তথা বন্দুকযুদ্ধে নিহত নয়নের মা’ও দাবি জানিয়েছেন, রিফাত হত্যা এবং তাঁর নিজের ছেলে নয়ন বন্ডের এনকাউন্টার, সবটাই সাজানো।
তিনি বলেছেন, এই ঘটনার পেছনে রয়েছে বিরাট রহস্য, যা প্রকাশ্যে আসছে না।
মিন্নির সঙ্গে রিফাতের বিয়ের জন্যে এই ঘটনা ঘটেনি। কারণ ইতিপূর্বে মিন্নির সঙ্গে প্রায় ছ’মাস পূর্বে নয়নের বিয়ের একটি কাগজ পাওয়া গেছে। যেখানে মিন্নির সই রয়েছে। তারমানে মিন্নির সঙ্গে নয়নের আগে বিয়ে হয়েছিল। এমনটাই কথা উঠে আসছে। যদিও মিন্নি বলছেন যে, তাঁর জানা ছিল না, সে কোন কাগজে কিসের জন্যে সই করেছে।
তাহলে দু’মাস আগে রিফাত-এবং মিন্নির বিয়ে যখন ধূমধাম করে দেয়া হয়, তখন কেন নয়ন বাধা দিতে এলেন না ? তাহলে বুঝা যাচ্ছে পরিষ্কার, ঘটনার কারণ বিয়ে নয়, অন্যকিছু। নয়নের মা সাংবাদিকদের কাছে বিলাপ করে করে এই কথাগুলো বলেছেন।
অসুস্থ মিন্নি দাবি করেছেন, ‘আসামি শনাক্তের কথা বলে পুলিশ লাইনসে নিয়ে আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। তাদের শেখানো বক্তব্য আদালতে দিতে চাপ দেওয়া হয়। আমি প্রাণ বাঁচাতে আদালতে পুলিশের শেখানো জবানবন্দি দিতে বাধ্য হয়েছি’।
২৪ জুলাই মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম কারাগারে সাক্ষাৎ শেষে ফিরে এসে জানিয়েছেন ‘মিন্নি তার ওই জবানবন্দি প্রত্যাহার চান। আমি তাকে বলেছি জেলারের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। আবেদনের নিয়মকানুন আমি তাঁকে বুঝিয়ে এসেছি।’
মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর সম্পূর্ণ বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছেন বাংলাদেশ পুলিশের ওপর থেকে। তাঁরা নিরপেক্ষ হয়ে বিচার করছেন না বলেই দাবি জানান তিনি।
এই ঘটনায় পিবিআইর তদন্ত দাবি করেছেন মোজাম্মেল বাবু।
হত্যা ঘটনায় সন্দেহজনকভাবে উঠে এসেছে আরো একজনের নাম। তিনি বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাবেক সাংসদ সদস্য দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী সামসুন্নাহার খুকি ।
সংবাদ সম্মেলনে মিন্নির বাবা বলেছেন, ‘এ হত্যার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। তার মধ্যে একটি কারণ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের স্ত্রীর সঙ্গে আমার মেয়েজামাইর বাগবিতণ্ডা। রিফাত হত্যার কয়েক দিন আগে রাসেল স্কয়ারের জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বাসার সামনে মাটিয়ার ক্যাফে চা খেতে এসে মোটরবাইক রাখাকে কেন্দ্র করে রিফাত শরীফ ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের স্ত্রী সামসুন্নাহার খুকির মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। সেদিন রাতেই খুকি তাঁর বোনপো রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজীকে বাসায় ডেকে নালিশ করেন। পরে রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী চন্দন ও রাব্বি আকনকে নিয়ে নয়নের সঙ্গে বৈঠক করে রিফাত শরীফকে হত্যার পরিকল্পনা করে’।