মাতৃদুগ্ধ ছাড়া সন্তান অসহায়; কবি জীবনানন্দকে ছাড়া বাঙালি অসহায়।
সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি কবি জীবনানন্দ দাশের ১২১তম জন্মবার্ষিকী মহা আড়ম্বরে উদযাপিত হলো বরিশালে।
অসাধারণ এই অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা ছিল ‘মনের খোরাক’ নামক একটি সংগঠন।
জীবনানন্দকে কেউ বলেন নির্জনতার কবি, কেউ বলেন বোধের কবি, কেউ প্রকৃতি কবি আবার কে্উবা বলেন পরাবাস্তব কবি। নানান নামে, নানান উপমা-অলংকার দিয়েও শেষ পর্যন্ত জীবনানন্দ কে, তাঁর কবিতার ধরণ কে ব্যাখা করা যায় না। তাই তো কবি নিজে বলেছেন,
‘আমার কবিতাকে বা এ কাব্যের কবিকে নির্জন বা নির্জনতম আখ্যা দেওয়া হয়েছে ; কেউ বলেছেন, এ কবিতা প্রধানত প্রকৃতির বা প্রধানত ইতিহাস ও সমাজ-চেতনার, অন্যমতে নিশ্চেতনার ; কারো মীমাংসায় এ কাব্য একান্তই প্রতিকী ; সম্পুর্ণ অবচেতনার ; সুররিয়ালিষ্ট। আরো নানারকম আখ্যা চোখে পড়েছে। প্রায় সবই আংশিকভাবে সত্য- কোনো কোনে কবিতা বা কাব্যের কোনো কোনো অধ্যায় সম্বন্ধে খাটে, সমগ্র কাব্যের ব্যাখা হিসেবে নয়। ’
তিনি কল্পনার সঞ্জীবনী মন্ত্রে অনুভূতি মুখর। এমন ধারা বাংলা কবিতায় অভিনব। তাঁর কবিতায় এরকম অনুভূতি জীবন ও রূপ লাভ করে, বিশ্বময়ী প্রকৃতি, জীবন, মৃত্যু, কাল সমস্ত কিছুই তার কাছে রক্তে-মাংসে জীবন্ত। যেমন,
“আহলাদের অবসাদে ভরে আসে আমার শরীর,
চারিদিকে ছায়া-রোদ-ক্ষুদ-কুঁড়া-কার্তিকের ভিড় ;”
অনুষ্ঠান সাহিত্যিকদের হাটে পরিণত হয়েছিল। উপস্থিত ছিলেন কবি ভাস্কর চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ফকরুল আলম, রাহুল আনন্দ, মারজুক রাসেল প্রমুখ বিদ্বদজনেরা।
এছাড়াও সাংস্কৃতিক পর্বে অংশ নিয়েছে ‘কথা আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র’, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্তি সংসদ, কালচারাল সোসাইটি, ইউল্যাব সংস্কৃতি সংসদ।