বাংলাদেশে খুন-ধর্ষণ তো রয়েছেই, পাশাপাশি নতুনভাবে জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে সাইবার ক্রাইম। সেকথা প্রত্যক্ষ ভাবে না হলেও দেশের পুলিশকে প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পরোক্ষভাবে স্বীকার করেই নিলেন।
রবিবার সহকারি পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্যে রাজশাহীর সারদায় গেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানের ভাষণে তিনি দেশের পুলিশকে সকল দিক দিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করার জন্যে নির্দেশ দিলেন।
এদিন তিনি বলেন, “দেশে অপরাধের ধরণ পালটে যাচ্ছে। সাইবার ক্রাইম, মানিলন্ডারিং, মানবপাচার ইত্যাদি বৈশ্বিক অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে। পাশাপাশি সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকের মতো অশুভ সামাজিক ব্যাধি।”
বাংলাদেশে ব্লগার হত্যা, সাধারণ মানুষকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যার সঙ্গে সঙ্গে অগুণতি বৃদ্ধি পাচ্ছে নেশাকারবারীর সংখ্যা। নেশাকারবারীরা আর দেশে সীমাবদ্ধ নেই। প্রতিবেশি বিভিন্ন দেশে, রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশের জনসাধারণের পক্ষ থেকে অভিযোগ শোনা যায়, দেশের প্রশাসন ঠিক নয়। রাস্তায় মেয়েরা ইভটিজিং প্রভৃতি বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছে। কিন্তু সরকার পক্ষ থেকে সমস্যা সমাধানের কোন তাগিদ নেই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকারান্তরে আজ তা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন।
তিনি বলেন, “সমাজ থেকে অপরাধ নির্মূলে জনসম্পৃক্ততার মাধ্যমে জনবান্ধব পুলিশ গঠনে আপনাদের অগ্রপথিকের ভূমিকা পালন করতে হবে।”
প্রসঙ্গত, এই সমস্ত সাইবার ক্রাইমের সঙ্গে জড়িতদের সাজা হয় মাত্র তিন ভাগের। সাইবার অপরাধে গ্রেপ্তারকৃতদের বেশিরভাগই মামলা থেকে খালাস পেয়ে যাচ্ছে। এর কারণ প্রসিকিউশন সন্দেহাতীতভাবে অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। আইনে সর্বোচ্চ ১৪ বছর ও সর্বনিম্ন ৭ বছরের জেলের বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু সাজা হয় খুব কম অপরাধীর। ফলে দেশে বেড়েই চলেছে অপরাধের মাত্রা।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় বিশেষ হেলিকপ্টারে শেখ হাসিনা বাংলাদেশ পুলিশ আকাদেমিতে পৌঁছান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারি প্রধানমন্ত্রঙ্কে স্বাগত জানিয়েছেন।
হাসিনা খোলা জিপে চড়ে নবীন পুলিশ কর্মকর্তাদের সমাপনী কুচকাওয়াজ সম্পূর্ণ পরিদর্শন করেন। এরপর প্রশিক্ষণের সময় ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী সহকারি পুলিশ সুপারদের হাতে তুলে দেন ট্রফি।