ঢাকা: বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ ছেলে শেখ রাসেলের Sheikh Russel (তখন রাসেলের বয়স ১১ বছর) জন্মদিনে তাঁর কবরে অশ্রুসজল চোখে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন দুই দিদি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করে বিপথগামী কিছু সেনা সদস্য। সেই সময়কার ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র রাসেলও রেহাই পাননি তাদের হাত থেকে।
এদিন নিহত হন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মীনীসহ কনিষ্ঠ ভ্রাতা, ২ ছেলে, ২ পুত্রবধূ ও পরিবারের ১৮ জন। কেবল বিজ্ঞানী স্বামীর কাছে জার্মানি থাকায় প্রাণে রক্ষা পেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
বঙ্গবন্ধুকে তাঁর জন্মস্থান গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় দাফন করা হলেও রাসেলসহ Sheikh Russel পরিবারের অন্য সদস্যদের ঢাকার বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এদিন ঢাকায় শেখ রাসেল Sheikh Russel স্মরণে এক আলোচনায় শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়াউর রহমান নিজেকে সেনাপ্রধান ঘোষণার কয়েকদিন পরেই অবৈধভাবে রাষ্ট্রপতির পদও বাগিয়ে নেয়।
এখন তার দলের লোকের মুখে আমাদের গণতন্ত্রের কথা শুনতে হয়, ভোটের কথা শুনতে হয়, মানবাধিকারের কথা শুনতে হয়!’ তাদের কাছ থেকে গণতন্ত্র, ভোট ও মানবাধিকারের কথা শোনা দুর্ভাগ্যজনক।
রাসেল Sheikh Russel দিবস পালনে মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘শেখ রাসেল পদক’ প্রদান অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। এ সময় তিনি এসব কথা বলেন।
মঙ্গলবার শেখ রাসেলের Sheikh Russel জন্মদিন উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার ভোরে ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকার বনানী কবরস্থানে যান। সেখানে তারা শেখ রাসেলের পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের কবর জিয়ারত ও প্রাথনা করেন।
গোলাপের পাপড়ি ছিটিয়ে শ্রদ্ধা জানান হারানো স্বজনদের স্মৃতির প্রতি। ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর জন্ম হয়েছিল শেখ রাসেলের Sheikh Russel। বেঁচে থাকলে মঙ্গলবার তার ৫৮ বছর পূর্ণ হতো।
শেখ রাসেলের Sheikh Russel জন্মদিবস এ বছর দ্বিতীয়বারের মতো ‘শেখ রাসেল দিবস’ হিসেবে উদযাপন করা হচ্ছে রাষ্ট্রীয়ভাবে।বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যার পর সেনাবাহিনীতে থাকা অবস্থায় জিয়াউর রহমানের ক্ষমতায় আরোহন, তার আমলের জাতীয় নির্বাচন ও নানা ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী।
বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারকাজ করতে যেসব বিচারক বিব্রতবোধ করেছিলেন তাদের অনেকেই এখন খুব বড় বড় দার্শনিক হয়ে গেছেন বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।তিনি বলেন, হ্যাঁ, আমি কিছু বলি না।
কারণ, আমার একটাই লক্ষ্য। এই দেশটা আমার বাবা স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন, এ দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন একটা সুন্দর জীবন পায়, নিরাপদ জীবন পায়, উন্নত জীবন পায়।আর বাংলাদেশ যে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা অর্জন করেছি, সেই বাংলাদেশ যেন বিশ্বসভায় একটা মর্যাদা নিয়ে চলতে পারে। এটাই ছিল আমার লক্ষ্য।
সে লক্ষ্য অর্জন করার জন্য স্বজনহারা বেদনা নিয়ে আমাকে চলতে হয়েছে। জিয়া ঘাতকদের সহযোগিতা করেছিল, চক্রান্তের সঙ্গে ছিল এবং জাতিরজনককে হত্যার পর ঘাতকদের পুরস্কৃত করেছে।
তাদের পুরস্কৃত করেছে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে এই অন্যায়-অবিচার তো আমি এসে নিজের চোখে দেখেছি।ছোটবোনসহ এ সময় ভারতে শরণার্থী জীবনের স্মৃতিচারণ করেন শেখ হাসিনা।কবি সুকান্তের ভাষায় তিনি বলেন, এ বিশ্বকে শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি/ নবজাতকের কাছে এই আমার অঙ্গীকার। এটাই করতে চাই।
আমার বাংলাদেশ যেন স্বাধীনতার চেতনায় এগিয়ে যায়, একটা শান্তিপূর্ণ বিশ্ব আমরা চাই। যুদ্ধ চাই না, ধ্বংস চাই না, অস্ত্র প্রতিযোগিতা চাই না, শান্তি চাই আমরা, শান্তি চাই। কোনো শিশু রিফিউজি হোক চাই না, কোনো শিশু বুলেটের আঘাতে তার জীবনপ্রদীপ নিভে যাক, বা তোর ছোট্ট দেহ ক্ষতবিক্ষত হোক, সেটা আর চাই না। বিশ্বে শান্তি ফিরে আসুক। আর আমার দেশের মানুষ তারা ভালো থাকুক।