ঢাকা: বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ বলেছেন, Bangladesh-myanmar সীমান্তে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অপতৎপরতা মেনে নেবে না বিজিবি ও বিজিপি।
এজন্য যৌথ টহল শুরুর ব্যাপারে একমত হয়েছে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। তিনি বলেন, Rohingya প্রত্যাবর্তনে আশাবাদ ব্যক্ত করা হলেও সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ মেলেনি।
তবে মাদক চোরাচালান বন্ধ, অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষার কথা হয়েছে সদ্য শেষ হওয়া সীমান্ত সম্মেলনে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (bgb) এবং বর্ডার গার্ড পুলিশের (bgp) মধ্যে মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে গত ২৩ থেকে ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত ৮ম সীমান্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সেই সম্মেলনের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে মঙ্গলবার বিজিবি সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, Bangladesh-myanmar সীমান্তে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অপতৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতার কারণে সীমান্তে বিশৃঙ্খলা দেখা দিচ্ছে।
আমরা সীমান্ত সম্মেলনে বিষয়টি নজরে এনেছি। সীমান্তে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অপতৎপরতা রোধে যৌথভাবে সীমান্তবর্তী স্থলপথ পর্যবেক্ষণ করবে bgb-bgp। যৌথ ও সমন্বিত টহলের বিষয়ে একমত হয়েছি আমরা।
নৌ-পথে টহল অব্যাহত আছে। সীমান্তে যেসব অপরাধ আছে সেসব নিয়ন্ত্রণে ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেছে বিজিপি।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, রোহিঙ্গা ও অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের প্রত্যাবাসনে তারা ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেছে। এ ব্যাপারে তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ অব্যাহত থাকবে।
আশা করি, আমাদের মধ্যকার যোগাযোগ আরও জোরালো ও কার্যকর হবে। সেক্টর, ডিজি, সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে যোগাযোগ বাড়ানোর ব্যাপারে উভয়পক্ষই একমত হয়েছি। পূর্বের যেকোনো সময়ের চেয়ে বিজিবি ও বিজিপির মধ্যে যোগাযোগ বাড়বে বলে মনে করি।
ইতিবাচক মনোভাবের কথা অনেকবারই শুনেছি। কিন্তু কী কারণে জিরো লাইনে এখনো কয়েক হাজার মানুষ বসে আছে? তাহলে ইতিবাচক মনোভাব কীভাবে দেখছেন?
এমন প্রশ্নের জবাবে বিজিবি ডিজি বলেন, আমি মিয়ানমারের তিন পর্যায়েই কথা বলেছি। প্রত্যেক পর্যায়েই তারা আমাদের কথা গুরুত্বের সঙ্গে শুনেছেন। এই শোনা, ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করা, আশ্বস্ত করা, আমাদের কথা গ্রহণ করাকে আমরা ইতিবাচক সাড়া হিসেবে দেখছি।
যদিও Rohingya প্রত্যাবাসন দীর্ঘ মেয়াদি একটা প্রসেস। তারা এই জায়গায় কাজ করছেন বলেই মনে হয়েছে।
Rohingya ইস্যুতে কাউন্টার পার্ট হিসেবে তাদের নন রেসপন্সিভ মনে হয়েছে। ইতিবাচক মনোভাব কি শুধু টেবিলেই? এমন প্রশ্নের জবাবে বিজিবি প্রধান বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া Rohingya নাগরিকদের মিয়ানমারের জাতীয় পাঠ্য কারিকুলামে পড়াশুনা করানো হচ্ছে।
কারিগরি শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। তাদের জাতীয় সঙ্গীতে পাঠদানের ভিডিও আমরা দেখিয়েছি। মানবিক কারণে মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতেই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এটা উপস্থাপন করা হয়েছে। কূটনৈতিক পর্যায়েও কাজ হচ্ছে।
বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে। সীমান্তের স্থলপথে মাইন অনেকাংশেই শনাক্ত করা যাচ্ছে না। যেসব জায়গায় চোরাচালান, মানব-পাচারের ঘটনা বেশি এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অপতৎপরতা বেশি সেখানে মাইন আছে বলে তারা জানিয়েছে।
আমরা বলেছি, সেখানে আমরা যৌথভাবে কাজ করতে চাই। যেখানে ঝুঁকি কম সেখানে যেন মাইন সরিয়ে নেওয়া হয়। এসব বলার পর আমরা দেখব কতটুকু কাজ হচ্ছে। আমরা আপডেট জানব।
এই তৎপরতা অব্যাহত থাকলে একটা ইতিবাচক ফল আসবে। তাদের ভূখণ্ডে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অপতৎপরতা চলছে। দুই দেশের বর্ডার বা এর নিকটতম জায়গায় ঘটছে। কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদী যেন তাদের ও আমাদের ভূখণ্ডে বিশৃঙ্খলা করতে না পারে সেজন্য আমরা যৌথভাবে কাজ করব।
আমাদের সরকারের অবস্থান জিরো টলারেন্স নীতি। কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদীদের স্থান, অবস্থান নিতে আমরা দেব না। রিয়েল টাইম তথ্য আদান-প্রদান করতে পারলেই কেবল যৌথ অভিযান সম্ভব।
পাহাড়ে স্পেশাল অপারেশন ও ডিজিএফআই সদস্য নিহতের ব্যাপারে তিনি বলেন, সময় স্বল্পতার কারণে বা ঘটনার আকস্মিকতার কারণে অনেক তথ্য শেয়ার করা সম্ভব হয় না। যে কারণে একজন ডিজিএফআই সদস্যকে আমরা হারিয়েছি।
এটি আমাদের ভূখণ্ডের ভেতরে ঘটেছে। তদন্ত হচ্ছে। আমরা চাই ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে।
বাংলাদেশে ইয়াবার চোরাচালান, কারবার সবই হচ্ছে সীমান্ত পথে। যা আসে মিয়ানমার থেকে। সীমান্তে মাদক চোরাচালান রোধে বিজিবি কতটা সফল? এমন প্রশ্নের জবাবে ডিজি বলেন, বিজিবি মাদকের চোরাচালান বন্ধে সফল।
তবে শতভাগ সফল তা বলব না। তবে জিরো টলারেন্স নীতি ধারণ করে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে বিজিবি।