ঢাকা: পাঁচ বছর আগে মায়ানমারে myanmar সেনা অভিযানের মুখে বাংলাদেশের Bangladesh কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন আশ্রয়শিবিরে ঠাই নিয়ে সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গা।
এই শরনার্থীদের মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু জঙ্গি রোহিঙ্গা Rohingya। তারা অনবরত ক্যাম্পে খুন-খারাপি চালিয়ে যাচ্ছে। উখিয়া-টেকনাফের Rohingya আশ্রয় শিবিরগুলোতে ক্রমে দীর্ঘ হচ্ছে খুনোখুনির তালিকা।
চলতি মাসেই ক্যাম্পগুলোতে খুন হয়েছেন ৯ জন। গত ৫ মাসে এ সংখ্যা ঠেকেছে ২৫ জনে। এসব খুনের মামলায় যারা বাদী বা সাক্ষী হয়েছেন, তাদেরই পরবর্তী সময়ে খুন করা হয়েছে। আবার খুনের শিকার হওয়া রোহিঙ্গাদের অধিকাংশই ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা কমিটির নেতা (মাঝি) ও স্বেচ্ছায় পাহারারত স্বেচ্ছাসেবক।
এর ফলে চরম আতঙ্ক নিয়ে সময় পার করছেন সাধারণ রোহিঙ্গারা। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে ক্যাম্পের আশপাশের স্থানীয়দেরও।এমন অবস্থায় নড়েচড়ে বসেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
কক্সবাজারের Rohingya শিবিরগুলোতে হত্যা-মাদক ঠেকাতে ৬টি ক্যাম্পে ‘অপারেশন রুট আউট’ নামে এক চিরুনি অভিযান চালানো হয়েছে।
এতে ৪১ জন Rohingyaকে আটক করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যরা। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত উখিয়ার ৬টি ক্যাম্পে এপিবিএন-৮ এবং ১৪ যৌথভাবে অভিযান চালায়।
আটককৃতদের মধ্য ৬ জন হত্যা মামলার আসামি এবং ৩ জনকে মাদকসহ আটক করা হয়। এছাড়া অন্যান্য মামলার আসামি ছিল ৪ জন। বাকি ২৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে মোবাইল কোর্টে সাজা প্রদান করা হয়।
শনিবার সকালে ৮-এপিবিএন এর সহকারী পুলিশ সুপার (অপস্ অ্যান্ড মিডিয়া) মো. ফারুক আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। গত চার মাসে Rohingya ক্যাম্পে ছয় মাঝিসহ অন্তত ২০ জন খুন হয়েছেন। এর মধ্য সাতজন স্বেচ্ছাসেবক।
সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার দুই রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়। এবার টার্গেট কিলিং ঠেকাতে ক্যাম্পে ‘অপারেশন রুট আউট’ নামে যৌথভাবে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)।
এপিবিএন জানিয়েছে, ক্যাম্পে পরিস্থিতি শান্ত রাখতে ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আমির জাফরের নেতৃত্ব পুলিশের টিম ক্যাম্প-১৩, ১৮, ১৯, ১৭, ২০ ও ২০ এক্সটেনশন এ নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ‘অপারেশন রুট আউট ’ নামে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হয়।
প্রথম দিনের অভিযানে ৪১ জন অপরাধীকে আটক করা হয়। সহকারী পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ জানান, ৬টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ‘অপারেশন রুট আউট’ নামে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
এসময় হত্যা-মাদক মামলাসহ বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত ৪১ জনকে আটক করা হয়। তিনি বলেন, কিছু অপরাধী ক্যাম্পে ত্রাস সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। কিন্তু কোনও অপরাধী ছাড় পাবে না। ক্যাম্প পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে। ক্যাম্পের পরিস্থিতি শান্ত রাখতে জীবন বাজি রেখে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন এপিবিএন সদস্যরা।
খুনের শিকার রোহিঙ্গাদের স্বজন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দেওয়া তথ্য মতে, ক্যাম্পে মাদক-অপহরণসহ নানা অপরাধে জড়িতদের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা বা কোনো মামলার সাক্ষী হলেই দুর্বৃত্তদের টার্গেটে পড়ছেন সাধারণ রোহিঙ্গারা।
এরপর যাকে তাদের বাঁধা মনে হচ্ছে, তাকে খুন করে ‘সরিয়ে দেওয়া’ হচ্ছে। আবার এমন অপরাধ করেও পাহাড় বেষ্টিত ক্যাম্প থেকে সহজে আত্মগোপনে চলে যেতে পারছে খুনীরা। এ কারণে খুন করার আগে তাদের তেমন ভাবতেও হচ্ছে না।
সব রোহিঙ্গার একই ভাষ্য- আমাদেরই মাঝে রয়েছে একটি চক্র, অদৃশ্য ইশারায় অপরাধ ঘটাচ্ছে। আমাদেরই নির্যাতন করছে, কথায় কথায় খুন করছে। আমরা পুলিশকে এসব বিষয় জানিয়েছি। যারাই অপরাধীদের বিষয়ে জানিয়েছে, মামলার বাদী হয়েছে, স্বাক্ষী হয়েছে, তাদেরই টার্গেট করে দুর্বৃত্তরা মেরে ফেলছে।
এ অবস্থায় সাধারণ রোহিঙ্গাদের জীবনের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে যৌথ অভিযান চালানোর দাবি জানিয়েছেন রোহিঙ্গারা।সর্বশেষ গত ২৭ অক্টোবর ভোরে কুতুপালং ১৭ নম্বর ক্যাম্পের সি ব্লকের বাসিন্দা কেফায়েত উল্লাহর ছেলে আয়াত উল্লাহ (৪০) এবং মোহাম্মদ কাসিমের ছেলে ইয়াছিনকে (৩০) গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
২০১৭ সালে মানবিকতার কারণে অনেকের ঘরের উঠানেও রোহিঙ্গাদের ঘর করে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। সেটাই এখন কাল হয়েছে স্থানীয়দের। ক্যাম্পের আশপাশে রয়েছে বিপুল সংখ্যক স্থানীয় পরিবার। রোহিঙ্গা দুর্বৃত্তদের কারণে নিজ দেশে পরবাসীর মতোই সন্ধ্যার পর প্রয়োজনেও ঘর থেকে বের হতে ভয় পান স্থানীয় মানুষ।