ঢাকা: ফের কক্সবাজারের Rohingya শরনার্থীশিবিরে দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের গুলিযুদ্ধে দুই জন নিহত হয়েছে।শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উখিয়া ক্যাম্পে গুলিযুদ্ধে তারা নিহত হয়।
তবে অপর সূত্র দাবি করেছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী এবং পুলিশের মধ্যে গুলিযুদ্ধে তারা নিহত হয়েছে। উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্প ৮ ইস্ট, ব্লক বি-৬৩ এবং ব্লক বি-৪৯ ক্যাম্পে এ কাণ্ড ঘটে। বাংলাদেশে শরনার্থী জীবন-যাপন হলেও Rohingya দের জঙ্গিপনা থেমে নেই।
অহরহ তারা খুন-খারাপি, ডাকাতি, ক্যাম্প যুবতীদের তুলে নিয়ে দেহব্যবসা থেকে শুরু করে বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে। স্বদেশে ফেরত যাবার উদ্যোগ নেওয়ায় Rohingya নেতাসহ বেশ কয়েকজনকে তারা হত্যা করেছে।
নিহতরা হল- উখিয়ার বালুখালি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ব্লক বি-২৪ এলাকার মোহাম্মদ নূর প্রকাশ ইউনুছের ছেলে সলিম উল্লাহ (৩৩) ও অপর নিহতের পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। এ বিষয়ে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারীক শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, Rohingya ক্যাম্পের ওই এলাকায় একজন Rohingya নেতাকে (হেড মাঝি) সন্ত্রাসীরা মারধরের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
তখন তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পুলিশও পাল্টা গুলি করে। এ সময় দুই Rohingya সন্ত্রাসী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।পুলিশের দাবি নিহত রোহিঙ্গারা সন্ত্রাসী।পরে ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
আত্মরক্ষায় এপিবিএন সদস্যরাও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এ সময় নিজেদের ছোড়া গুলিতে দুই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পরে ঘটনাস্থল তল্লাশি করে বন্দুক, ম্যাগজিন ও ৭০টি গুলি পাওয়া যায়।
এদিকে আন্দামান সাগরে একটি ডুবতে থাকা নৌকা থেকে ১৫৪ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছে ভিয়েতনামের একটি তেলবাহী জাহাজ। উদ্ধারের পর তাদেরকে মায়ানমারের নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। বুধবার আন্দামান সাগর থেকে উদ্ধার করা হয় এই রোহিঙ্গাদের।
ভিয়েতনামের সংবাদমাধ্যম ভিটিসি নিউজের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাই ডুওং ২৯ নামের সেই ভিয়েতনামি তেলবাহী জাহাজটি সিঙ্গাপুর থেকে মায়ানমারের দিকে যাচ্ছিল। যাত্রাপথে ডুবতে থাকা সেই নৌকাটি চোখে পড়ে জাহাজের নাবিকদের।
সাগরের যে এলাকায় নৌকাটি অবস্থান করছিল, সেখান থেকে মায়ানমারের উপকূল আরও ৪৫৮ দশমিক ৭ কিলোমিটার দক্ষিণে। উদ্ধার ১৫৪ জন রোহিঙ্গার মধ্যে ৪০ জন নারী ও ৩১টি শিশু রয়েছে।
ভিটিসি নিউজ জানিয়েছে, সাগরে নৌকাটির ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এবং তলদেশ ফেঁটে যাওয়ায় ধীরে ধীরে ডুবছিল সেই নৌকাটি। বুধবার উদ্ধারের পর এই রোহিঙ্গাদের জাহাজে তোলা হয় এবং পরের দিন বৃহস্পতিবার তাদের মায়ানমারের নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করেন নাবিকরা।
মায়ানমারে যেসব সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী আছে, তাদের মধ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমরা অন্যতম। তবে শত শত বছর ধরে মায়ানমারে বসবাস করলেও এখনও তাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেয়নি মায়ানমার। মূলত আরাকান অঞ্চলেই বসবাস রোহিঙ্গাদের।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে দেশটির আরাকান রাজ্যে বেশ কয়েকটি পুলিশ স্টেশন ও সামরিক ছাউনিতে বোমা হামলা চালায় সশস্ত্র রোহিঙ্গা গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা)। সেই হামলার পর রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর আক্ষরিক অর্থেই ঝাঁপিয়ে পড়ে মায়ানমারের সেনাবাহিনী।
আরাকানের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত একের পর এক গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, সেই সঙ্গে ব্যাপকমাত্রায় চলে হত্যা, ধর্ষণ ও লুটপাট। সেনাবাহিনীর অত্যাচারে টিকতে না পেরে ২০১৭ ও ’১৮ সালে অন্তত ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন।
এছাড়া গত কয়েক বছরে সাগর পাড়ি দিয়ে প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার উদ্দেশ্যেও ছুটছেন তাদের অনেকে। সম্প্রতি আন্দামান সাগর দিয়ে রোহিঙ্গাদের যাতায়াত বেড়েছে। এর আগে গত ৮ ডিসেম্বর জাতিসংঘের শরণার্থ বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের এক বিৃবতিতে বলা হয়েছিল, আন্দামান সাগরে নৌকার ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়ায় সাগরে ভাসছেন ২০০ রোহিঙ্গা।