ঢাকা: অশান্ত মায়ানমার (Myanmar) থেকে ছোড়া গোলা আবারও বাংলাদেশের (Bangladesh)অভ্যন্তরে এসে পড়েছে। মায়ানমারের (Myanmar) যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া দুটি গোলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকায় পড়ে।
এ নিয়ে গত দুই সপ্তাহে তিন দফায় মায়ানমারের (Myanmar) গোলা এলো বাংলাদেশ (Bangladesh) সীমান্তে। এ কারণে সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবিকে (bgb)রাখা হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্কতায়।
ঢাকায় (Dhaka) বিদেশ মন্ত্রকের সূত্রের খবর, মায়ানমারের (Myanmar) কোনো উসকানিতে পা দেবে না বাংলাদেশ (Bangladesh) তবে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হয়েছে রোহিঙ্গাদের (Rohingya) নতুন করে অনুপ্রবেশ ঠেকাতেও। রবিবার ঢাকার মায়ানমারের (Myanmar) রাষ্ট্রদূতকে তলব করে প্রতিবাদ জানায় বিদেশমন্ত্রক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সকাল সাড়ে ৯টার সময় নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তের রেজু আমতলী বিজিবি বিওপির আওতাধীন সীমান্ত পিলার ৪০-৪১-এর মাঝামাঝি স্থানে মায়ানমার (Myanmar) সীমান্তের ওপারে সেনাবাহিনীর দুটি যুদ্ধবিমান এবং দুটি ফাইটিং হেলিকপ্টার টহল দেয়।
সে সময় তাদের যুদ্ধবিমান থেকে প্রায় ৮ থেকে ১০টি গোলা ছোড়া হয়। এ ছাড়া হেলিকপ্টার থেকেও আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫টি গুলি করতে দেখা যায়। এ সময় সীমান্ত পিলার ৪০ বরাবর আনুমানিক ১২০ মিটার বাংলাদেশের (Bangladesh) অভ্যন্তরে যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া দুটি গোলা পড়ে।
স্থানীয়রা জানান, নাইক্ষ্যংছড়ির ১ নম্বর ওয়ার্ডের তুমব্রু বিজিবি বিওপির সীমান্ত পিলার ৩৪-৩৫-এর মাঝামাঝি মিয়ানমার অংশে ২-বিজিবির তমব্রু রাইট ক্যাম্প থেকে চার রাউন্ড ভারী অস্ত্রের গুলি করা হয়।
ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, আবারও দুটি বিমান থেকে ছোড়া গোলা এসে সীমান্তে পড়েছে। তমব্রু সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির ঘটনায় গত রবিবার দুটি এবং বৃহস্পতিবার একটি মর্টার শেল সীমান্তের এপারে এসে পড়েছে।
এতে রোহিঙ্গা (Rohingya) আশ্রয় প্রার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বেড়েছে। বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘সীমান্তে টহল বাড়ানোর পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারিও বৃদ্ধি করা হয়েছে।
গত ১০/১২ দিন ধরে সীমান্ত ঘেঁষা এলাকায় মায়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি হচ্ছে। এই কাণ্ডে বাংলাদেশ সীমান্তের অংশে থাকা রোহিঙ্গা ও স্থানীয়রা আতঙ্কে রয়েছে।বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে মায়ানমার সরকারের গোলাগুলি চলছে।
মায়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, মায়ানমার বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে আবারও সহিংসতা শুরু হয়েছে। রাখাইন রাজ্যের মংডুতে পুলিশ ফাঁড়ি দখল এবং ১৯ পুলিশ আধিকারীক নিহতের জেরে সীমান্ত এলাকায় বিমান হামলা শুরু করেছে মায়ানমার জান্তা।
গত বুধবার ফাঁড়িতে অতর্কিত হামলা চালায় আরকান আর্মির সশস্ত্র সদস্যরা। সেখানে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম জব্দ করে।
সেই সঙ্গে ১৯ জন জান্তা পুলিশ সদস্যকে হত্যা করেছে।জিরো লাইনের কাছাকাছি কোণারপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বর্তমানে ৪ হাজারের মতো রোহিঙ্গা নাগরিক আশ্রিত রয়েছে। তাদের মধ্যে মায়ানমারের বাহিনীর হামলার আশঙ্কা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
মায়ানমারে গত ৩ সপ্তাহ ধরে উভয়পক্ষের মধ্যে মরণঘাতী যুদ্ধ চলছে। দিনভর সামরিক হেলিকপ্টার থেকে নিচের বনাঞ্চল লক্ষ্য করে ব্যাপক ফায়ারিং হচ্ছে। এতে ভয় পেয়ে সীমান্তের এপারের বাগানচাষি ও শ্রমিকরা কাজ ছেড়ে পালিয়ে এসেছেন।
আতঙ্কে বন্ধ হয়ে গেছে সীমান্ত সড়কের নির্মাণ কাজও।ঢাকা চাইছে, আর কোনো রোহিঙ্গা বা মায়ানমারের নাগরিক বাংলাদেশে আসুক।