অসম:গতকাল চা শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সাথে এক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী অসমের (assam) সব চা শ্রমিকদের দৈনিক ন্যুনতম মজুরী ২৭ টাকা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। কিন্তু তারপরও অসমের ব্রহ্মপুত্র এবং বরাক উপত্যকার শ্রমিকদের সমহারে মজুরির কোন প্রস্তাব নেই।
এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট( bdf)। এক প্রেস বার্তায় ফ্রন্টের আহ্বায়ক পার্থ দাস বলেন যে উভয় উপত্যকায় শ্রমিকরা যেহেতু একই হারে শ্রমদান করেন তাই তাঁদের সমহারে মজুরির ব্যাবস্থা করা সরকারের দায়িত্ব।
কিন্তু বরাক উপত্যকার সমস্ত সংগঠনের বারবার আর্জি সত্ত্বেও সরকারের এই পদক্ষেপ না নেওয়া বরাকের প্রতি বৈষম্যের স্পষ্ট উদাহরণ। পার্থ দাস বলেন যে স্বাধীনতার আগে তৎকালীন কাছাড়ের চাপাতা আসামে সর্বোৎকৃষ্ট ছিল। কিন্তু এরপর বাইরের চা মালিকদের অতিরিক্ত লাভের স্পৃহা এবং পরিকাঠামো উন্নয়ন সহ অন্যান্য অবহেলায় এই মানের অবনয়ন অব্যাহত।
সরকারের উচিত ছিল এই ব্যাপারে যথাযথ নির্দেশ জারি করে অসমের বরাকের বাগান মালিকদের সেই অনুযায়ী শিল্পোৎপাদন করতে বাধ্য করা। তাতে এই অঞ্চলের চা পাতার চাহিদা বৃদ্ধি ও সরকারি কোষাগারে অর্থবৃদ্ধি দুইই হতো ।
এছাড়া বাগানের অনাবাদি জমিতে অন্যান্য অর্থকরী ফসল ফলিয়ে বাগানের লভ্যাংশ বৃদ্ধি সম্ভব। এই ব্যাপারেও সরকারি উদ্যোগ প্রয়োজনীয়। কিন্তু এসব না করে বরাকের চাপাতার দাম কম এসব ছেঁদো যুক্তি দেখিয়ে এখানকার শ্রমিকদের বঞ্চনা কোনভাবেই মানা যায়না।
বিডিএফ আহ্বায়ক আরো বলেন যে বরাকের প্রতি এই ধরনের বঞ্চনা দশকের পর দশক ধরে চলে আসছে। আজ চলছে। নাহলে করিমগঞ্জের প্রস্তাবিত মেডিক্যাল কলেজের কাজ এভাবে ঝুলিয়ে রাখা হতনা।
সরকারের সদিচ্ছা থাকলে মহাসড়ক, মাল্টি মডেল লজিস্টিক পার্ক, শিলচর এবং করিমগঞ্জ শহরের মাস্টার ড্রেনেজ প্রকল্প কিম্বা উড়ালপুল, আই টি পার্ক, বিবেকানন্দ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ইত্যাদির কাজ অনেক আগেই শেষ করা যেত। স্বাধীনতার পর থেকেই বরাকের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে কখনই দিশপুরের আগ্রহ ছিলনা। তাই কয়েক দশক ধরেই বরাকের ছেলেমেয়েদের স্থানীয় চাকরির সুযোগ প্রায় নেই বললেই চলে ।
মেধাবী কর্মপ্রার্থীরা অন্যান্য রাজ্যে কর্মসংস্থানের খোঁজে যেতে বাধ্য হচ্ছেন এবং এখানকার যুবসমাজ হতাশার শিকার হচ্ছেন । সবাইকে তাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিকল্প সন্ধান করা জরুরী বলে মন্তব্য করেন তিনি। বিডিএফ মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে ও জয়দীপ ভট্টাচার্য।