অসমে অস্বাভাবিক এবং মর্মান্তিকভাবে গণপ্রহারের দ্বারা হত্যাকাণ্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঝংকার শইকীয়া থেকে শুরু করে অভিজিৎ-নীলোৎপল এবং মরিয়ানীর দেবাশিষ গগৈর মতো অনেক উদীয়মান যুবক গণ প্রহারের শিকার হয়ে প্রান হারিয়েছেন।
ক্রমে এমন নিষ্ঠুরতা বৃদ্ধি হওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন সচেতন মহল। প্রত্যেকের মনেই একটি প্রশ্ন, ‘এমন ঘটনা বৃদ্ধির পেছনের কারণ কী? কে উন্মত্ত জনতাকে আইন হাতে তুলে নিয়ে একটি জীবন নেয়ার অধিকার দিয়েছে?”
নর্থ ইস্ট নাও’ য়ের সাংবাদিক সমাজের বিভিন্ন সচেতন ব্যক্তিদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। সকলই আইন ব্যবস্থা ঢিলা তথা অপরাধী কঠোর শাস্তি না পাওয়ার জন্যেই এমন ঘটনাগুলো বারবার ঘটে যাচ্ছে বলে মতপোষণ করেছেন।
উচ্চ আদালতের আইনজীবী শান্তনু বরঠাকুর বলেন, ধীরে ধীরে আইনের ওপর মানুষের বিশ্বাস হারিয়ে যাচ্ছে। মানুষ একজনকে শুধু সন্দেহের ভিত্তিতে গণ নিগ্রহের দ্বারা হত্যা করাটা সহজ হয়ে পড়েছে। ন্যায় ব্যবস্থার ওপর বিশ্বাস হারানোর ফলে একজন ব্যক্তিকে অপরাধী সাজিয়ে কিছু উন্মত্ত জনগণ প্রহার করে হত্যা করছে।”
“দ্বিতীয়ত, মানুষ বহু অন্ধবিশ্বাসের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। মানুষের মানবীয় অনুভুতি একেবারে নেই হয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্যে ফাষ্টট্ৰেক আদালতে এই বিচার প্রক্রিয়া চালানো প্রয়োজন যাতে শীঘ্রই দোষী শাস্তি পায়। অসহিষ্ণুতা এবং অরাজকতা দুটোই এই হত্যার আড়ালের কারণ।”
গুয়াহাটির দুই জলজ্যান্ত প্রাণ অভিজিৎ এবং নীলোৎপলকে বাচ্চা ধরা সন্দেহে কয়েক বছর আগে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে গণপ্রহারে।
অভিজিতের বাড়া অজিত কুমার নাথ বলেন, অভি-নীল এবং ঝংকার শইকিয়ার বিচার প্রক্রিয়া লম্বা হওয়ার জন্যে এবং অভি-নীলের হত্যাকারী এখনো পর্যন্ত শাস্তি না পাওয়ার জন্যে মানুষ ভেবেই নিয়েছে যে অপরাধ করলেও কোন শাস্তি নেই। এজন্যেই এমন অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে।”