নয়া সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বাংলাদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টান সমাজের পর পাকিস্তানের হিন্দু, খ্রিস্টান এবং শিখ ধর্মাবলম্বী লোকেরা এই আইনকে নাকচ করে দিয়েছেন এবং সিএএ’ আনয়ন করা ভারত সরকারকে বারংবার ধিক্কার জানাচ্ছেন।
পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, “আমরা শুধু শরণার্থী সংকট নিয়েই নয় বরং এ থেকে দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা নিয়েও উদ্বিগ্ন। পাকিস্তান আরও শরণার্থীর জন্য জায়গা করে দিতে সক্ষম নয়।”
এ অবস্থায় মানবতাবাদী, ধর্মনিরপেক্ষ, স্পষ্টবাদী লেখক তসলিমা নাসরিন সংশোধনী আইন এবং অসাম্প্রদায়িক মহান ভারতকে কোন আঙ্গিকে দেখছেন? আমরা দেখে নেবো।
তিনি টুইটারে প্রকাশ করেছেন নিজস্ব মতামত। লিখছেনঃ
“এটি অত্যন্ত আশ্চর্যের বিষয় যখন বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তানের কর্মকর্তারা ভারতের সিএএ সম্পর্কে দুঃখ প্রকাশ করেন। তাঁরা অভিযোগ করছেন যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ধর্মনিরপেক্ষতার বিরুদ্ধে। কিন্তু তাঁরা কি তাদের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা রেখেছেন? তাঁদের রাষ্ট্র কি ধর্মনিরপেক্ষ? ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র, ধর্মনিরপেক্ষ থাকবে। প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো বরং ধর্ম নিরপেক্ষ হওয়ার চেষ্টা করুক।”
Very strange when officials of B'desh,Pakistan,Afghanistan get upset about India's CAA.They complain CAA is against secularism.But do they've secularism in their constitutions? Are their states secular?India is a secular state,will remain secular.Neighbours shd try to be secular.
— taslima nasreen (@taslimanasreen) December 18, 2019
ধর্মনিরপেক্ষ লেখক আরো ট্যুইট করেন, “সমস্ত দ্বন্দ্ব ও বিভ্রান্তির উর্দ্ধেও চরম সত্য যে একজন মুসলমান ভারতের রাষ্ট্রপতি হতে পারেন এবং একজন হিন্দু বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হতে পারেন। উপমহাদেশে হিন্দু ও মুসলমানদের শান্তিপূর্ণভাবে একসাথে থাকতে হবে। এটিই সবচাইতে সেরা কাজ যা আমরা করতে পারি।”
Despite all the conflicts and confusion, it is true that a Muslim can be President of India and a Hindu can be Chief Justice of Bangladesh. Hindus and Muslims have to live together peacefully in the subcontinent. This is the best thing we can do.
— taslima nasreen (@taslimanasreen) December 18, 2019
প্রসঙ্গত, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের উদ্দেশ্য ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন।
আফগানিস্তান, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান থেকে ধর্মীয় নির্যাতনের ফলে ভারতে আগত হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পারসি এবং খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী অভিবাসীদের ভারতীয় নাগরকিত্ব দেবার জন্যই এই বিল।
অন্যভাবে বললে, ভারতের প্রতিবেশী মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলির অমুসলিম অভিবাসীদের সহজে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেবার জন্য এই বিলের অবতারণা বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের।
১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনে ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য ১২ মাস একটানা ভারতে থাকার নিয়মের সঙ্গে বিগত ১৪ বছরের মধ্যে ১১ বছর ভারতে বসবাস করা জরুরি ছিল।
কিন্তু সংশোধনী আইনের দ্বিতীয় অংশে এর পরিবর্তন ঘটানো হচ্ছে।
উপরোক্ত ৩ দেশ থেকে আসা ৬ ধর্মাবলম্বীদের জন্য ১১ বছর সময়কালটিকে নামিয়ে আনা হচ্ছে ৬ বছরে।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বা ক্যাব বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সম্মতি পাবার পর আইনে পরিণত হয়েছে।