বিজেপির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল অসমের ফরেনার্স ডিটেনশন ক্যাম্প (বিদেশি বন্দিশালা) গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। সাধারণ নির্বাচনের আগে আসামের শিলচরে নির্বাচনী জনসভায় খোদ প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদির দেওয়া এই আশ্বাসের ঠিক উল্টোটাই এখন ঘটছে। নতুন করে গড়া হচ্ছে ‘বিদেশিদের বন্দিশালা’।
অসম সরকারের বিদেশি ট্রাইব্যুনালে শনাক্ত হওয়া বিদেশি নাগরিকদের জন্য অসমে ছয়টি বন্দিশালা রয়েছে।
জেলা কারাগারের ভেতর এসব বন্দিশালায় বিদেশিদের রাখা হয়। এঁদের বেশির ভাগই বাংলাদেশি নন । রাজ্য সরকার এর মধ্যে গোয়ালপাড়ার ডাকুরভিটায় ২০ বিঘা জমি বরাদ্দ করেছে। এই বন্দিশালা আসলে মৃত্যুপুরী।সবাই ভারতীয় আইনে ‘বিদেশি’।
কিন্তু অন্য কোনো দেশ তাঁদের নাগরিক বলে মানতে নারাজ। তাই তাঁরা যাবেন কোথায়—প্রশ্ন সাধনের।
গুয়াহাটির বিশিষ্ট আইনজীবী হাফিজ চৌধুরীর দাবি, ডিটেনশন ক্যাম্পের এক-তৃতীয়াংশই হিন্দু। নরেন্দ্র মোদির আশ্বাসে কোনো গতি হয়নি প্রায় এক হাজার বন্দীর। আসামে বিজেপি ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই ছয়টি বন্দিশালা আছে।
ভারতের বৃহত্তম ফরেনার্স ডিটেনশন ক্যাম্পও (এফডিসি) গড়ে তোলা হচ্ছে এই রাজ্যে। বৈধ নথি পত্র থাকতে ও শিলচর ডিটেনশন ক্যাম্পে চরম অব্যবস্থার মধ্যে দিন যাপন করছেন বদরপুরের জয় দেব ঘোষ এদের সকলের নাম ছিল এন আর সি চূড়ান্ত তালিকায় এরে মধ্যে বদরপুরের অনেক মানুষের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ডি নোটিশ এর মধ্যে রয়েছে বিজেপির এক কর্মীর মার নামে বিদেশী নোটিশ ।
একদিকে এনআরসি আতঙ্ক অন্যদিকে শুরু হয়েছে ডি ভোটার আতঙ্ক অনেক মানুষের ঘরে সন্দেহভাজন বিদেশির নোটিসগুলো সার্ভ করছে বর্ডার পুলিশ। অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসাবে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল থেকে ইস্যু হওয়া ওইসব নোটিশ পেয়ে হতভাক হয়ে গেছেন ভুক্তভোগীরা।
যাঁদের নামে বিদেশি নোটিশ আসছে তাঁরা এর আগে কোন দিন এরকম নোটিশ পাননি। এনআরসির সম্পূরক তালিকা প্রকাশিত হবার পরই এই প্রথম তাঁদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে সন্দেহভাজন বিদেশির নোটিশ। তাই বদরপুরের সামগ্রিক পরিস্থিতি খুবই খারাপের দিকে যাচ্ছে বলে ধারনা করা হচ্ছে ৩১ আগস্টের পর থেকে বদরপুরে বিদেশী নোটিশ পেয়েছেন কয়েকজন নাগরিক।
বদরপুরের বাসিন্দা দিলীপ সরকার, বাবার নাম বিরেশ সরকার। তাঁর বাড়িতে সীমান্ত পুলিশ পৌছে দিয়েছে বিদেশি নোটিস।
নির্ধারিত তারিখে করিমগঞ্জ ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে হাজির হবার জন্যও পুলিশ তাকে জানিয়ে দিয়েছে। বর্ডার পুলিশের সঙ্গে দেখা করে জানতে চান এই নোটিশের বিষয়ে। কিন্তু বর্ডার পুলিশ তাকে আদালতে যাবারই নিদান দিয়েছে। কান্নায় ভেঙে পড়েন শ্যামেন্দ্র।
‘নর্থ ইস্ট নাও’ কে তিনি জানিয়েছেন, তার নামে নামে ডি ভোটার মামলা কোন দিনই ছিল না। এফটি থেকে আগে কোন দিন কোন নোটিশও পান নি। কিন্তু এখন মাথায় যেন বাজ পড়ার উপক্রম হয়েছে।
এদিকে বদরপুরের আরও কয়েকজনকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসাবে সন্দেহভাজন বিদেশি বলে এদের নোটিশ ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর।
এনআরসি আতঙ্কের মধ্যে বর্ডার পুলিশের এই যথেচ্ছ ভাবে নোটিস বিতরণ নিয়ে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তাতে বদরপুরে বড় ধরনের আইণ শৃঙ্খলা জনিত ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে তথ্যাভিজ্ঞ মহল আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।