চারদিন জল প্রলয় চালানোর পর অবশেষে ধীরে ধীরে হ্রাস পাওয়া শুরু হয়েছে ধলেশ্বরী এবং কাটাখাল নদীর জলস্তর। প্রতি ঘন্টায় ১ সেন্টিমিটার করে কমছে কাটাখাল নদীর জল, ধলেশ্বরী নদীর জল কমছে ঘণ্টায় প্রায় ৮ সেন্টিমিটার করে।
কিন্তু জলস্তর হ্রাস পেলেও এখনও পর্যন্ত বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে এই দুই নদী।
সোমবার দুপুর ১টায় মাটিজুরিতে কাটাখাল নদীর জলস্তর ছিল ২২.২৯ মিটার এখানে নদীর বিপদসীমা ২০.২৭ মিটার। একই সময় ঘাড়মুরাতে ধলেশ্বরী নদীর জলস্তর ছিল ৩০.৬২ মিটার, এখানে নদীর বিপদসীমা ২৮.০৫ মিটার।
এদিকে গত শনিবার থেকে হাইলাকান্দিতে জলের তলায় রয়েছে জেলার তিনটি প্রধান সড়ক। হাইলাকান্দি থেকে ধোয়ারবন্দ হয়ে শিলচর সংযোগী ৩৯ নং রাজ্য সড়ক, মাটিজুরি নিমাইচানপুর পূর্ত সড়ক এবং সামারিকোনা থেকে মিজোরামের ফাইসেন সংযোগী সড়ক। এই তিন সড়কে সোমবার ও যানচলাচল ছিল বন্ধ।
এবারের বন্যায় জেলার সর্বমোট ৮৬ টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। জেলার প্রায় ৩ হাজার ১৫০ টি বাসগৃহ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ২০ হাজার ৮১৯টি পরিবারের প্রায় ১২ হাজার ৬৫২ হেক্টর কৃষিভূমি ও ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলায় বিগত চার দিনে বন্যার ফলে হওয়া ক্ষয় ক্ষতির পর্যালোচনার জন্য সোমবার এক সভার আহ্বান করেন জেলা শাসক কির্তী জাল্লি। বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে আয়োজন করা এই সভা শেষে জেলা শাসক জানান, নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকায় বসবাস করা লোকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাজ্য সরকারের তরফে দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী (এসডিআরএফ) থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে এই সব অঞ্চলের এক তালিকা প্রস্তুত করতে এবং জরুরি অবস্থানে স্থানান্তরিত করার মত স্থানগুলি সনাক্ত করার জন্যও নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতির উপর নজর রাখার জন্য জেলা প্রশাসনের তরফে একটি ২৪ ঘন্টা চালু থাকা কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা গুলিতে স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে ওষুধ বিতরণ করা হয়েছে। আঘাতপ্রাপ্ত পশুদের চিকিৎসা প্রদানের জন্য চারটি পশুচিকিৎসা ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্য, রাসায়নিক প্যাকেট, পানিয় জলের প্যাকেট এবং অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহের জন্য জেলা প্রশাসন প্রতিনিয়ত কাজ করছে যাচ্ছে বলেও জানান জেলা শাসক কির্তী জল্লি।