হাতে গোনা আর মাত্র ১০ দিন৷ এরপরই গোটা দেশ সহ আপামর বাঙালি আলোর রোশনাইয়ে ঝলমলে হয়ে উঠবে৷
২৭ অক্টোবর রবিবার ঘোর অমাবস্যায় অন্ধকারকে দুরে সরিয়ে আলো দিয়ে ঝকঝকে করতে মা কালি মর্তে আবির্ভূত হবেন।
কিন্তু যাদের মাটির প্রদীপে ঝলমল করে বা করেছে উৎসবের আঙিনা, সেই মৃৎশিল্পীদের ঘরেই এখন, অন্ধকার।আর তার জন্য সৌজন্যতা বৈদ্যুতিক মোমবাতি, টুনি লাইট।
কালিপুজো এলেই ঘর আলো করতে মাটির প্রদীপের চাহিদা বেশ থাকত। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে গৃহস্থরা ঝুঁকেছেন তুলনায় সস্তা এবং বাহারি বৈদ্যুতিক আলোর দিকে।
এই পরিস্থিতিতে কালিপুজোর মুখে চিন্তায় এখানকার মৃৎশিল্পীরা। মাটির প্রদীপের কদর কমতে থাকায় এই কাজ ছেড়ে অনেকেই অন্য পেশার দিকে ঝুঁকছেন।আলোর উৎসব তথা দীপাবলীতে ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে মাটির প্রদীপ।
তবে এই প্রদীপের চাহিদা কমলেও হাল ছাড়েননি এখানকার অনেক মৃৎশিল্পীরা৷ মৃৎশিল্পীরা পুজোর নানা উপকরণের সঙ্গে মাটির প্রদীপ তৈরি করে আসছেন বংশ পরম্পরা থেকে ।
কিন্তু বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ধরনের আধুনিক বৈদ্যুতিক বাতি বাজারে চলে আসায় প্রাচীন সেই মাটির প্রদীপ হারিয়ে যেতে বসেছে। কিন্তু বাজারে সেই প্রদীপের কম চাহিদা থাকায় প্রায় বন্ধের মুখে এই শিল্প।
বৃহত্তর কাটিগড়ার বিভিন্ন গ্রামের বহু মৃৎশিল্পীরা পরিবার আগে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিল এখন সেটা কমে দাঁড়িয়েছে। মৃৎশিল্পীরা দীপাবলিকে সামনে রেখে ব্যস্ত নানা ধরনের প্রদীপ তৈরি করতে।
বেশ কিছু মৃৎশিল্পীর গলায় আক্ষেপের সুর। তাঁরা বলেন, আজকালকার ডিজিটাল যুগে যে হারে চায়না লাইট, টুনি বাল্ব ও নানা ধরনে এলইডি লাইট এসেছে সেই তুলনায় হাতে গড়া মাটির প্রদীপের বিক্রয় কমেছে।লাভ কম হলেও মৃৎশিল্পীদের আশা এই বছর তাঁরা লাভের মুখ দেখবেন।
তাঁরা আরও বলেন, বর্তমানে মাটি ও খড়ির দামও বেড়েছে। কিন্তু প্রদীপের দাম বাড়ছে না। যা কোনও রকম খাওয়া খরচটা ওঠে।
জনৈক মৃৎশিল্পী জানান বাজারের চীনা বাতির রমরমা ব্যাবসা, সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে উমরপুর সহ আশেপাশের মৃৎ শিল্পীদের। কালীপুজোর সময় বাড়তি উপার্যনের দীপাবলির প্রদীপ এতদিন ছিল ভরসা৷ কিন্তু প্রদীপ তৈরি করেও উপর্যনের আশা ক্রমশ আঁধারে পরিণত হচ্ছে৷ কারণ হিসেবে বাজারে চীনা বাতির রমরমা ব্যাবসাকে দায়ী করছেন মৃৎ শিল্পীরা৷
এক শিল্পী জানান, বাজারে এসেছে চীনা মিনিচার, মানুষ তাই কিনেই আলোর উৎসবে মাতছেন৷ মাটির প্রদীপে ঝোঁক নেই! চাহিদা তাই বেশ কম৷ আগামী দিনে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত থেকে আমাদের দিন গুজরান করা সম্ভব হবে কী না তাতেও রয়েছে প্রশ্ন?
আগামি দিনে মাটির প্রদীপের চাহিদা বাড়বে বলে আশাবাদি অঞ্চলের মৃৎশিল্পীরা।