গুয়াহাটি: গোটা ভারতসহ অসমে বাল্যবিবাহের সংখ্যা যে কম নয়, সেটা এখন আরো প্রকট হয়ে উঠেছে। দেখা যায়, বয়সে অনেক বেশি হলেও ছেলের মা বাবা বা ছেলেও চায় কম বয়সের মেয়ে বিয়ে করাতে। অথচ ছেলের বয়সের দিকে তাকায় না।
এত কচি মেয়ে তারা চায় যে সেই মেয়ে যদি নাবালিকাও হয়, তাও সই! এ বড় অন্যায়। অসমে বাল্য বিবাহসহ আরো অনেক অন্যায় আছে, যেগুলো গুণে শেষ হবে না।
রাজ্যজুড়ে বাল্য বিবাহ বিরোধী অভিযানে প্রচুর গ্রেফতার হয়েছেন বলে শুক্রবার জানিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। অভিযান লাগাতার চালানো হবে জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘বিবাহ আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে যারা বাল্য বিবাহের সঙ্গে জড়িয়েছেন তাদের কাউকে রেয়াত করা হবে না। পুলিশকে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে বাল্য বিবাহের অভিযোগ জমা পড়েছে তাদের সবাইকে গ্রেফতার করে পকসো আইনে ব্যবস্থা নিতে। বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি নেব।’
অসমের মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ’১৪ বছরের নিচে নাবালক ও নাবালিকার বিবাহ রুখতে বিশেষ অভিযান চালানো হবে।’
সমাজতত্ত্বিদরা এই বাল্যবিবাহ নিয়ে মনে করছেন, আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকার জন্য অধিকাংশ অভিভাবক মেয়ের ভরনপোষণের দায়িত্ব দীর্ঘদিন বহন করতে পারছেন না। তাই নাবালিকা থাকাকালীনই মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
তবে শুধু আর্থিক অবস্থা নয়, এখানে পুরুষতান্ত্রিকতা বিরাট বড় ব্যাপার। কারণ মেয়েদের এখনো বোঝা মনে করা হয়। মেয়েকে বিয়ে দেয়া মানেই মনে করা হয় উদ্ধার হওয়া।
সম্প্রতি স্বাস্থ্য দফতরের একটি সমীক্ষায় জানানো হয়, দেশের মধ্যে বাল্যবিবাহ এবং প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনা সবচেয়ে উদ্বেগজনক অসমে। সেখানে প্রায় ৩১ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয় ১৪ বছর বয়সে। ১৮ বছর হওয়ার আগেই অনেকেই সন্তানের জন্ম দিচ্ছে আর এর ফলে প্রসূতি এবং নবজাতকের মৃত্যু হার সেখানে অনেক বেশি।
তবে এখন গ্রেফতার তো হচ্ছে ঠিক, কিন্তু সংসারের চালক যদি জেলে থাকে, তাহলে ঘর চলবে কিভাবে? এই নিয়ে এখন হুলুস্থুল বেঁধেছে অসমে।