নয়াদিল্লি: ইতিমধ্যে Taslima Nasrin এবং Kabir Suman চর্চার কেন্দ্রে রয়েছেন। কবীর সুমনের বক্তব্যে তীব্রভাবে কটাক্ষ করেছেন Taslima Nasrin।
এবার লিখলেন ভিন্ন বিষয়ে। যুদ্ধভিত্তিক একটি সিনেমা দেখে প্রশংসা করেছেন Bangladesh থেকে নির্বাসিত লেখক তসলিমা নাসরিন। ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি ওই সিনেমা নিয়ে নিজের মতামত তুলে ধরেন।
তসলিমা নাসরিন লেখেন, ‘কাল রাতে “অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট” ছবিটা দেখছিলাম আর ভাবছিলাম, ক্ষমতাসীনদের বিবেকহীনতা আর হিংস্রতার কারণে ইতিহাসের শুরু থেকে কত অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হয়েছে!
মানুষের বিশেষ করে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের জীবনের এক পয়সার মূল্য কখনো ছিল না। গরিবকে গরিবের বিরুদ্ধে চিরকালই লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। “দেশপ্রেম” নামে এক দুর্বোধ্য শব্দ উচ্চারণ করে ক্ষমতাসীনরা গরিবদের বোকা বানাতেন। ক্ষুধার্ত পেটে দেশপ্রেম ধুয়ে খেতে হতো গরিবদের।’
লেখেন, ‘যুদ্ধবাজ লোকেরা এই ছবিটি দেখার পর কি কিছুক্ষণের জন্য হলেও নির্বাক হন না? যুদ্ধের বিরুদ্ধে আজ না দাঁড়ালেও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে একদিন না একদিন দাঁড়াতে হবেই। যুদ্ধ যে জিনিসকে সবচেয়ে বেশি মূল্যহীন করে, সে মানুষের জীবন। আমি রক্তপাতের বিরুদ্ধে, অকাল মৃত্যুর বিরুদ্ধে। আমার রাইফেলের নলে গিঁট দেওয়া হয়ে গেছে অনেক আগেই।’
এর আগে তসলিমা লিখেছেন, “যারা আমার সঙ্গে ইস্কুল কলেজে পড়েছে, বা যারা মেডিক্যালে পড়েছে, তারা বেজায় নিশ্চিন্তে, বেজায় হৈ হল্লা করে, বেজায় ধন সম্পদ নিয়ে বিন্দাস আছে। তাদের ঝলমলে হাস্যোজ্জ্বল ছবি দেখে প্রাণ জুড়োয়।
যারা আমার সঙ্গে এককালে সাহিত্য করতে শুরু করেছিল, তারা আজ নানা পদক আর পুরস্কার পাচ্ছে, রাজকীয় সম্মান পাচ্ছে, আনন্দ উৎসবে মেতে আছে। তাদের ঝলমলে হাস্যোজ্জ্বল ছবি দেখে প্রাণ জুড়োয়। তাদেরই কলিগ আমি পঁচিশ বছর বয়সীর মতো আজও স্ট্রাগল করছি।
সবারই বয়স হয়, অবস্থার বিবর্তন হয়, আমারই হয় না কিছু। আজও অনিশ্চয়তা আমার নিত্যসঙ্গী, আজও অন্যায়, অত্যচারের বিরুদ্ধে চেঁচাচ্ছি, আজও মার খাচ্ছি, অপমান সইছি। আনন্দ উৎসব আমার জন্য নয়।
বিন্দাস বেঁচে থাকা আমার জন্য নয়। আমার হয়তো এ-ই ভালো। নিশ্চয়তা হয়তো আমার সইতো না, অত সুখও হয়তো সইতো না”।