গত লোকসভা নির্বাচনেও হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী রত্না দে নাগের সঙ্গে লড়াই হয়েছিল সিপিএম প্রার্থী প্রদীপ সাহার।
তবে, এবারের লোকসভা নির্বাচনে হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে ঘাসফুল প্রার্থী রত্নাদেবীর সঙ্গে লড়াই কাস্তে-হাতুড়ি তারা প্রার্থী প্রদীপ সাহার নয়। এবার ঘাষফুলের প্রতিপক্ষ হিসেবে টক্কর দেবে পদ্মফুলের তারকা প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়।
তার কারণ হিসেবে রাজনৈতিক মহলের দাবি, গত কয়েক বছরে বামেদের জনপ্রিয়তা ও ভোট রেখা ক্রমশ নিম্নমুখী হয়েছে। পাশাপাশি বিজেপি তাদের শক্তি ক্রমশ বাড়িয়ে চলছে। সঙ্গে হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে তারকা প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের প্রার্থী হওয়াটা অনুঘটকের কাজ করেছে। ফলে বামেদের থেকে সুইং করা ভোটই তৃণমূল প্রার্থীর হ্যাট্রিকের পথে বাধা হতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
রাজনৈতিক মহলের এই আশঙ্কা বা মতামতকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। তৃণমূল প্রার্থী রত্না দে নাগ বলেন, ‘গত ১০ বছর ধরে যেভাবে প্রতিটি দিন আমি ও দলের কর্মীরা মানুষের পাশে থেকেছি, মানুষ তার প্রতিদান হিসেবে নিজের ভোটটি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছেন। ফলে আমার হ্যাট্রিক শুধু যে সময়ের অপেক্ষা মাত্র, তা ফল প্রকাশের দিন প্রমাণিত হয়ে যাবে’।
অন্যদিকে বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘প্রতিটি জায়গায় প্রচারে যেভাবে মানুষের ঢল নেমেছে, তাতে এটা নিশ্চিত করে বলতে পারি এবার হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে ফুল ফুটবে। আর সেটা হবে পদ্মফুল’।
ভোট কমা নিয়ে রাজনৈতিক মহলের ইঙ্গিত প্রসঙ্গে সিপিএম প্রার্থী প্রদীপ সাহা বলেন, ‘বামেদের ভোটব্যাঙ্ক অক্ষতই রয়েছে। এবারের নির্বাচনে তা আরও বাড়বে। কমার কোনও সম্ভাবনাই নেই’।
প্রসঙ্গত, গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী রত্না দে নাগ হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে মোট ৬ লক্ষ ১৩ হাজার ১১৮ টি ভোট পেয়েছিলেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিএমের প্রদীপ সাহা পেয়েছিলেন ৪ লক্ষ ২৪ হাজার ৬০টি ভোট। বিজেপি প্রার্থী চন্দন মিত্র ২ লক্ষ ২০ হাজার ৮৪৪ টি ভোট পেয়েছিলেন। তবে সদ্য শেষ হওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচনে বামেদের ভোট ব্যাপকভাবে কমে গিয়েছে। এই ভোটের একটা বড় অংশ বিজেপির দিকে যাওয়ায় গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি আসন বিজেপির দখলে গিয়েছে। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনের মতোই বামেদের একাংশের ভোট তাঁদের দিকে আসার আশায় বুক বাঁধছে বিজেপি। তবে শেষ পর্যন্ত হুগলির মানুষ ফের তৃণমূলে আস্থা রাখেন নাকি, ঘাসফুলের পরিবর্তে পদ্ম বা কাস্তে-হাতুড়িতে ভরসা করেন, তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ২৩ মে দুপুর পর্যন্ত।