তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ এবার চির ধরাচ্ছে সংসারে, বনগাঁর দম্পতি আলাদা হলেন

ঘাসফুল-পদ্মফুল । কাঁটা না থাকলেও কাঁটা হয়ে বিঁধছে সংসারে । রতন-সুমতির ভালবাসার সংসারে চির ধরালো এই দুই ফুল ।

ঘাসফুল ও পদ্মফুলের দ্বন্দ্ব যে কেবল রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ তা নয় । প্রতিদিন সহস্র নিরীহ মানুষ আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে এই রাজনৈতিক সংঘর্ষের শিকার হয়ে । হয়তো দেখা যাবে, নুন আনতে পানতা ফুরোয়, এমনই তাঁদের জীবন ! রাজনীতির ‘অ’, ‘আ’ তাঁদের জানা নেই ।

উত্তর ২৪ পরগণা অন্তর্গত বনগাঁর তৃণমূল নেতা সদ্য বিজেপি দলে নাম লেখানো সুমতির স্বামীর সঙ্গে সুমতির এখন আদায়-কাঁচকলায় সম্পর্ক ।  এক ছাদের তলায় থাকলেও রতন-সুমতি এখন আলাদা ঘরে শুচ্ছেন।

উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে বনগাঁ পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর হন রতন পোদ্দার। পারিবারিক, রাজনৈতিক সবক্ষেত্রেই স্বামীর পাশে স্ত্রী, এবং স্ত্রী’র পাশে স্বামী ছিলেন ।

স্বামীর হাত ধরে স্ত্রী স্বয়ং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে প্রবেশ করেন । এরপর বনগাঁর ২২ নম্বর আসনটি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়ে যায় ।   ২০১৫ সালে রতনবাবু কাউন্সিলর পদ থেকে সরে দাঁড়ান। নির্বাচনে স্বামীর স্থানে লড়ে জয়লাভ করেন স্ত্রী সুমতি ।

কিন্তু ফাটল ধরল ২০১৯ সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে । খোদ চেয়ারম্যানের গলত ধরা পড়ায় তৃণমূলের দলীয় সদস্যরাই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করেন ।

তৃণমূল ছেড়ে টলিউড থেকে শুরু করে বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা যেভাবে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন, ঠিক সে ভাবেই সুমতিসহ ১২ জন সদস্য বিজেপি দলে নাম লেখালেন ।

রাজনৈতিক ক্ষেত্রের এই অভিমানের রেশ গড়াল দাম্পত্য জীবনে ! স্বামী তৃণমূল, স্ত্রী বিজেপি । কেউ কাউকে সহ্য করতে পারছেন না এখন ।  স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যে কথাবার্তা নেই, তাঁদের শোবার ঘরও আলাদা হয়ে গেছে।

আসলে ভিন্ন ভিন্ন ফুল, ভিন্ন ভিন্ন চিহ্ন। কিন্তু নেতা-নেতৃদের মুখ্য উদ্দেশ্য যদি দেশের জনসাধারণের সত্যিকারের মঙ্গল করাই হয়, তাহলে দেশে এতো হানাহানি কখনোই সম্ভব নয় ।