পশ্চিমবঙ্গ

শান্তিনিকেতনে শুরু ঐতিহ্যবাহী পৌষ মেলা…

যে মেলার কথা না বললে বাংলার মেলা পরিতৃপ্ত হয় না, সম্পূর্ণতা পায় না, তা শান্তিনিকেতনের পৌষমেলা। বাঙালির সাংস্কৃতিক হৃদয় স্পন্দিত হচ্ছে এখানে।

আজ পবিত্র ৭ পৌষ, মঙ্গলবার। প্রতিবছরের রীতি অনুযায়ী শান্তিনিকেতনে শুরু হয়ে গেল ১২৫’তম আনন্দ-মিলনের পৌষ মেলা।

‘মোরে ডাকি লয়ে যাও মুক্ত দ্বারে’ সংগীতে বৈতালিক এবং উপাসনার মধ্যে দিয়ে শান্তিনিকেতনে শুরু হলো মেলা।

মঙ্গলবার কুয়াশাচ্ছ্বন্ন ভোরে শান্তিনিকেতন গৃহ থেকে ভেসে আসতে থাকে সানাইয়ের সুর। এরপর শুরু হয় ছাতিমতলায় উপাসনা।

 

প্রায় সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ উপাসনায় অংশগ্রহণ করেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বিদ্যুৎকুমার চক্রবর্তী, প্রাক্তন আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর প্রমুখ।

কলকাতাস্থিত শান্তিনিকেতনের পৌষমেলার ইতিহাসের পাতায় আমরা একটু চোখ বুলিয়ে নেবোঃ

১৩০২ বঙ্গাব্দের ৭ পৌষ (১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দ) পৌষ মেলার সূচনালগ্ন। তবে এদিনের ইতিহাস আরো অর্ধশতক বছর পুরনো।

১২৫০ বঙ্গাব্দের ৭ পৌষ মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশের কাছে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা গ্রহণ করেন।

সেই পবিত্র দিনটিকে কেন্দ্র করে উৎসব এবং মেলার ভাবনা ছিল দেবেন্দ্রনাথের। শান্তিনিকেতনের আশ্রম ডিডেই তার প্রমাণ মেলে। সেখানে ট্রাস্টিগণ ওই জমিতে মেলা বসানোর উদ্যোগ নেবেন বলে লেখা রয়েছে।

এক সময় পৌষ মেলা ‘ভুবনডাঙার মেলা’ নামে পরিচিত ছিল।

উল্লেখ্য, বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পাশের মাঠে মেলার বাণিজ্য এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রধান আসর বসত।

এরপর ১৯৫১ সালে বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা লাভ করে। এরপরই বিশ্বভারতীর অন্যান্য কার্যের সঙ্গে মেলারও শ্রীবৃদ্ধি ঘটে।

১৯৬১ সালে মেলা পূর্বপল্লির মাঠে চলে আসে।

তবে এখন সম্পূর্ণ শান্তিনিকেতন জুড়ে চলে পৌষ মেলা।

প্রতিবছর আজকের দিনে (৭ পৌষ) ব্রহ্মোপাসনার মাধ্যমে মেলার সূচনা হয়।

বক্তৃতা, স্মৃতিতর্পণের পাশাপাশি চলে প্রাণমাতানো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অবশ্যই থাকে বাউল-ফকিরের গান। ভারতের বিভিন্ন রাজ্য এবং বাংলাদেশের শিল্পীরা মিলিত হয়ে থাকেন এই মেলায়।

উল্লেখযোগ্য যে, ১৯৬১ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত সরকারিভাবে মূল মেলা ছিল ৩ দিনের। পরে ভাঙা ভাঙা মেলা থাকত আরও বেশ কয়েক দিন।

২০১৬ সালে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে তিনদিনের মেলা শেষ হতেই মাঠ খালি করে দেয়।

তবে এবছর পৌষ মেলায় মোট ৪দিনের ছাড়পত্র পাওয়া গেছে।

ইতিমধ্যেই লোকশিল্পীরা সেখানে উপস্থিত হয়ে গেছেন।

হাড়কাঁপানো ঠাণ্ডায় মাটির ভাঁড়ে ধোঁয়া ওঠা চায়ের স্বাদ নিচ্ছেন আবালবৃদ্ধবিনিতা সকলে।

 

 

 

 

সাগরিকা দাস

Recent Posts

বাংলাদেশে হিটস্ট্রোকে উপজেলা মহিলা ভাইসচেয়ারম্যান প্রার্থীসহ  ৪ মৃত্যু, স্থগিত নির্বাচন

ঢাকা: বাংলাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে চলেছে। ইতিমধ্যে অতি গরমের ফলে হিটস্ট্রোকে ৩৭ জন মারা গিয়েছেন।…

4 days ago

বাংলাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহে রেললাইন বেঁকে ট্রেন চলাচল বিঘ্ন

ঢাকা: বাংলাদেশে তীব্র তাপপ্রবাহে রেললাইন বেঁকে ট্রেন চলাচল বিঘ্ন ঘটছে। যাকে রেলের ভাষায় বলা হয়…

5 days ago

সাপ্তাহিক রাশিফল

মেষ রাশির জাতক জাতিকাদের জন্য সপ্তাহটি ভালোই হতে চলেছে। অর্থ উপার্জন হবে। সমাজে সম্মান বাড়বে।…

5 days ago

বাংলাদেশে তাপদাহে সিল্কসিটি ট্রেনে আগুনঈশ্বরদীতে রেললাইনের পাত বেঁকে গেছে

ঢাকা: বাংলাদেশে চলতি বছর সীমাহীন তাপদাহে মানুষের জীবনযাত্রা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বাংলাদেশে সরবোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে…

6 days ago

আপনার আজকের দিনটি

সিংহ: আজকের দিনটি আপনার জন্য নতুন কিছু শেখার দিন হবে। ভাগ্যের দিক থেকে দিনটি ভালোই।…

6 days ago

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত

ঢাকা: বাংলাদেশে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে আবুল কালাম (২৫)…

7 days ago