নয়াদিল্লি: আবারো কিছু বিষয় নিয়ে মুখ খুললেন তসলিমা নাসরিন।
ভেরিফাইড ফেসবুকে লিখেছেন:
“রাধিকা মার্চেন্টের চমৎকার বিবাহ স্পিচ শুনে আমরা মুগ্ধ হয়েছি, সেটির অনেকটাই, বিশেষ করে ভালো অংশটুকু, প্রতিজ্ঞা করছি তোমার ভাল মন্দ সব কেয়ার করবো, তোমার জীবন আন নোটিশড থাকবে না, আমি নোটিশ করবো, তোমার জীবন আনউইটনেসড থাকবে না, আমি উইটনেস করবো —২০০৪ সালে রিলিজ হওয়া ‘শ্যাল উই ড্রান্স’ ছবিতে সুসান সারানডানের সংলাপ থেকে নেওয়া।
রাধিকা শিক্ষিতা, তাঁর হয়তো দরকার ছিল না হলিউডের সিনেমা থেকে তাঁর বিবাহ স্পিচ নকল করার। তিনি হয়তো চেষ্টা করলেই লিখতে পারতেন হীরের মতো মূল্যবান সব বাক্য । অবশ্য এসব শব্দাবলি হৃদয় থেকে আসতে হয়। হীরে দিয়ে কেনা যায় না।
মনে আছে ট্রাম্পের স্ত্রী মেলানিয়া একবার একটা বক্তৃতা দিয়েছিলেন যে বক্তৃতার অনেকটাই ছিল মিশেল ওবামার বক্তৃতার নকল? ২০০৮ সালে ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কনভেনশানে মিশেল ওবামা যা বলেছিলেন, ২০১৬ সালে রিপাব্লিকান ন্যাশনাল কনভেনশানে মেলানিয়া ট্রাম্প একই কথা বলেছিলেন। শুধু কথা নয়, বাক্যের পর বাক্য এক ছিল।
১৯৯৮ সালে গাওয়া নচিকেতার রাজশ্রী গানটির সুর ১৯৯৬ সালে মিশরের গায়ক আমীর দিয়াবের হাবিবি নুর- এর সুরের নকল। সম্প্রতি এক বাঙালি ভদ্রলোক মিশরের কন্সার্টে আরবি গানটি শুনে নচিকেতার চুরির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।
এসব চুরি যারা ধরে ফেলতে পারে, তারা কিন্তু কম ট্যালেন্টেড নয়।
বাঙালির এই ট্যালেন্ট লক্ষ্য করেছি আমার লেখা এবং আইডিয়া যারা হরদম চুরি করছে তাদের ধরার ক্ষেত্রেই কাজ করে না। আশি নব্বই-য়ের দশকে আমি যা লিখেছি, তা বহু বছর ধরে লোকেরা হুবুহু নকল করে লিখছে। দুদিন আগেও প্রায় ৩৫ বছর আগে আমার লেখা ‘…. পশুরা পুরুষের মতো ধর্ষণ এবং গণধর্ষণের মতো ঘৃণ্য কাজ করে না, পাশবিক শব্দটি যেন নেতিবাচক অর্থে ব্যবহৃত না হয়’ –এই বাক্যাবলিই একজন নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার করার অভ্যেস কারওর আর নেই। কেউ নেই এসব চুরি হাতে নাতে ধরে । খবর করার কেউ নেই। আমি কি দিনভর চোর ধরবো, নাকি নিজের কাজ করবো! চোরেরা মহানন্দে চুরি করতে পারে এই বাংলায়, এ ব্যাপারে কোনও সংশয় নেই”।