নয়াদিল্লি: ভারতের মর্যাদাপূর্ণ পদ্মশ্রী পুরস্কারের জন্য বিশিষ্ট বাংলাদেশি গায়িকা রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার নাম ঘোষণা করেছে ভারত সরকার।
বন্যা পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হলেন।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) ২০২৪ সালের পদ্ম সম্মাননার জন্য তাঁর নাম ঘোষণা করেছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এই বিষয়ে অর্থাৎ পদ্ম সম্মান পাওয়া নিয়ে কী বললেন তসলিমা নাসরিন?
লিখেছেন, “বাংলাদেশের গায়িকা রিজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মান পদ্মশ্রী পাচ্ছেন বলে বাংলাদেশের লোকেরা তাঁকে অভিনন্দনে অভিনন্দনে ভাসিয়ে ফেলছে। আমি যদি পেতাম পদ্মশ্রী, তাহলে কী বলতো ওই লোকেরা?
পদ্মশ্রী তো পাবেই —
ও তো আর এস এসের লোক,
ও তো বিজেপির লোক,
ও তো হিন্দুত্ববাদী,
ও তো মোদিভক্ত,
ও তো হিন্দু হয়ে গেছে,
ও তো মুসলিমবিদ্বেষী… ইত্যাদি।
তসলিমা আরো লেখেন, কয়েক বছর আগে এক বন্ধু বলেছিল তোমাকে তো নোবেল পুরস্কার দেওয়া উচিত, কেন দিচ্ছে না? তুমি তো নোবেল পাওয়ার যোগ্য।
দ্বিতীয় বন্ধু বললো, নোবেল পেলে বাংলাদেশ তোমাকে রেড কার্পেট রিসেপশান দেবে। যারা তোমার বিরোধী, সবাই তোমার অনুরাগী হয়ে উঠবে। নিন্দুক বলতে কেউ থাকবে না। শুনে তৃতীয় বন্ধু বললো, এসবের কিছুই হবে না, বরং নিন্দুকেরা আরও নিন্দে করবে, বলবে–
ও তো নোবেল কমিটির লোকদের সঙ্গে শুয়ে পুরস্কারটা পেয়েছে,
ও তো ইসলামবিদ্বেষী, সে কারণে ইহুদি নাসারাদের দেশ ওকে পুরস্কার দিয়েছে,
ওকে দিয়ে তো ইসলামের বিরুদ্ধে লেখায় ইহুদি নাসারারা, সে কারণে নোবেল দিয়েছে, ও দেশের কলঙ্ক , ইত্যাদি।
এত অপমান, অবজ্ঞা, অপপ্রচার, উপেক্ষা, ঘৃণা, নিন্দা হেনস্থা কেন? নারীর সমানাধিকার, আর মানবাধিকারের জন্য যদি তুমি আপস না করে সংগ্রাম করো, যদি পুরুষতন্ত্র আর ধর্মের গড়ে তোলা ভূতুড়ে ইমারত ভেঙ্গে ফেলতে চাও, তাহলে ঘোর পুরুষতান্ত্রিক ধর্মান্ধ সমাজ তোমাকে এই পুরস্কার দেবে।
এই পুরস্কারটি পাওয়া অন্য সব পুরস্কার পাওয়ার চেয়ে কঠিন। কারণ এটি শুধু মেধা আর প্রতিভা থাকলেই পাওয়া যায় না, অন্য আরও গুণের দরকার হয়”।