দেশের প্রথম লোকপাল পদে অধিষ্ঠিত হলেন একজন বঙ্গসন্তান। পিনাকী চন্দ্র ঘোষ। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, লোকসভার অধ্যক্ষ সুমিত্রা মহাজন এবং বিশিষ্ট আইনজীবী মুকুল রোহতগি দ্বারা গঠিত লোকপাল নির্বাচন কমিটির সদস্যরা, কলকাতা হাইকোটের প্রাক্তন বিচারপতি, অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি তথা সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি পিনাকী চন্দ্র ঘোষকে দেশের প্রথম লোকপাল পদে নিয়োগ করেন।
২০১৭ সালে ৬৬ বছর বয়সে পিনাকীবাবু বিচারপতি হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন, বর্তমানে তিনি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য হিসেবে কাজ করছিলেন। দেশের প্রথম লোকপাল পদে পিনাকীবাবুর নিয়োগকে স্বাগত জানিয়েছেন দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনের পুরোধা তথা বিশিষ্ট সমাজকর্মী আন্না হাজারে। তিনি বলেন, দেশের প্রথম লোকাপালকে স্বাগত জানাচ্ছেন তিনি। এই লোকপাল নিয়োগ দেশের জনগণের ৪৮ বছরের আন্দোলনের ফসল। উল্লেখ্য, দুনীতি দমনে লোকপাল ও লোকায়ুক্ত নিয়োগের দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করেছিলেন আন্না হাজারে। নয়াদিল্লীতে কয়েকবার আবস্থান ধর্মঘট ও অনশন করেছিলেন তিনি। লোকপাল নিয়োগ কার্যত আন্না হাজারের আন্দোলনের ফসল। এদিকে দেশের প্রথম লোকপাল নিয়োগের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন পুদুচেরির রাজ্যপাল কিরন বেদী। তিনি বলেন, লোকপাল নিয়োগের ফলে দেশে সর্বস্তরে দুনীতির বিরুদ্ধে লড়াই করা যাবে।
উল্লেখ্য, দেশের প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সাংসদ ও কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে সেই অভিযোগের বিচার করতে পারবেন লোকপাল ও রাজ্য সরকারের মুখ্যম্মন্ত্রী, মন্ত্রী, বিধয়াক ও আমলাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে তাঁর বিচার করার জন্যই লোকাযুক্ত গঠন করা হয়। ২০১৪ সালের গোড়াতেই লোকপাল ও লোকায়ুক্ত আইন কার্যকর হয়। এই আইন প্রণয়নের ৫ বছরের মাথায় দেশের প্রথম লোকপাল নিয়োগ করা হোল ।
দেশের প্রথম লোকায়ুক্ত পদে পিনাকী বাবুর নিয়োগে আনন্দ প্রকাশ করেছেন তাঁর সহকর্মীরা। তাঁরা জানান অত্যন্ত শান্ত স্বভাব ও দ্রুত সঠিক বিচার করার ক্ষমতাই তাঁকে অনন্য করে তুলেছে। উল্লেখ্য অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি থাকাকালীন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার বান্ধবী শশিকলাকে দোষী সাব্যস্ত করে শাস্তি দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি শম্ভু নাথ ঘোষের ছেলে পিনাকী চন্দ্র ঘোষ। তিনি উত্তর কলকাতার জোড়াসাঁকোর দেওয়ান বারাণসী ঘোষের পরিবারের পঞ্চম প্রজন্ম।