‘ধূমকেতু’ পত্রিকা প্রকাশের অপরাধে বৃটিশ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বিদ্রোহী কাজী নজরুল ইসলাম। তাঁর বিচার হয়েছিল ব্যাঙ্কশালের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।
বিচারে তাঁকে ভর্ৎসনা করে পাঁচ টাকা জরিমানা করেছিলেন বিচারক। সেই ইতিহাস প্রসিদ্ধ মামলার নথি পরবর্তী সময় ব্যাঙ্কশাল কোর্টের রেকর্ডরুমে রাখা হয়।
এবার সেই ঐতিহাসিক নথি স্ব-মর্যাদায় আদালতে সংরক্ষণের জন্য অবশেষে ইচ্ছা জাহির করলেন কলকাতা নগর দায়রা আদালতের মুখ্য বিচারক সিদ্ধার্থ কাঞ্জিলাল।
জানা গিয়েছে, কিছুদিন আগে বিচারক সিদ্ধার্থ ব্যাঙ্কশালের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের (সিএমএম) কাছে চিঠি লিখে ওই নথির বিষয়ে জানতে চান।
তাঁর কথায়, এই ধরনের নথি আলমারিতে বন্ধ না থেকে তা সর্বসমক্ষে আসা একান্ত জরুরি। তাহলে, সাধারণ মানুষ কাছ থেকে এই অমূল্য নথি দেখার সুযোগ পাবেন। এছাড়াও, ওই নথি সংরক্ষণের ফলে সেটি দীর্ঘ সময় বাঁচিয়ে রাখারও সম্ভব হবে।
খবর এও, ওই নথির হদিশ পাওয়া গেলে তার প্রতিটি পাতাই মাইক্রোফিল্ম করা হবে।
আদালত সূত্রের খবর, কলকাতার বেন্টিক স্টিটের একটি প্রেসে ‘ধূমকেতু’ পত্রিকা ছাপা হত। ওই পত্রিকায় স্বাধীনতা আন্দোলনের নানা রোমাঞ্চকর ঘটনার তথ্য ছাপা হত।
খবর পেয়ে, ইংরেজ পুলিশ ওই প্রেসে হানা দিয়ে ‘ধূমকেতু’ পত্রিকার সব কপি আটক করে। গ্রেপ্তার করা হয় বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে।
সিল করে দেওয়া হয় প্রেসটি। মামলার তদন্ত শেষ করে নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনে পুলিশ চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে চার্জশিট পেশ করে।
মামলাটি বিচারের জন্য যায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে (এমএম)। চার্জ গঠন করে শুরু হয় কবির বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া। একাধিক সাক্ষী কোর্টে সাক্ষ্য দেন।
পরবর্তী সময় ওই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন কাজী নজরুল ইসলাম। তাঁকে জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বিচার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরই ওই মামলার যাবতীয় নথিপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয় এই ফৌজদারি কোর্টের রেকর্ডরুমে।
সেখানেই ওই নথি রয়েছে।