ভোটদান গণতান্ত্রিক অধিকার। এবার সেই অধিকার সাব্যস্ত করতে নিঃসঙ্গ প্রবীণদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়ালো কলকাতা নির্বাচন কমিশন।
আগামী ১৯ মে বারাসত লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বিধাননগর বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ। এই ভোটের প্রাক্কালে প্রবীণদের স্বার্থে এক ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ নিয়েছে কমিশন।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সেদিন ভোটদান করতে চেয়ে কোনও বৃদ্ধ-বৃদ্ধা যদি তাদের দ্বারস্থ হন, তাহলে তারা সবরকম সাহায্য করবে। প্রয়োজনে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা যদি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে একা যেতে অক্ষম হন, তাহলে তাঁদের ভোট গ্রহণ কেন্দ্রেও নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকেই করা হবে। তবে কমিশন সূত্রের আরও দাবি, সল্টলেক থেকে এখনও পর্যন্ত এই মর্মে কোনও আবেদন আসেনি। তবে কেউ কোনও আবেদন করলে অবশ্যই তা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
হঠাৎ কেন এমন সিদ্ধান্ত নিল কমিশন? কেন ই বা প্রবীণদের এতো গুরুত্ব দিচ্ছে তারা?
পশ্চিমবঙ্গে, তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণের দিন ভোট দিতে চেয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রায়গঞ্জের শতবর্ষ পার করা এক বৃদ্ধা। ভোট দেওয়ার ইচ্ছা জাহির করেছিলেন তিনি। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে এবং নিরাপত্তার কারণে তিনি ভোট দিতে যেতে ভয় পাচ্ছেন। তাই নির্বাচন কমিশন যদি তাঁকে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়, তাহলে ভালো হয়। নির্বাচন কমিশন বৃদ্ধার আবেদনে সাড়া দিয়ে তাঁর ভোট দেওয়ার সম্পূর্ণ ব্যবস্থা করা দেয়। গত ১৮ এপ্রিল একেবারে বাড়ি থেকে বুথ পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে তাঁকে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।
সেই ঘটনা মাথায় রেখেই নির্বাচন কমিশন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রের দাবি, সল্টলেকে বহু বৃদ্ধ-বৃদ্ধাই একাকী থাকেন। তাঁদের ছেলে-মেয়ে বা আত্মীয়রা অন্যত্র থাকায়, এখানে তাঁরা মূলত কেয়ারটেকার বা বাড়ির পরিচারক-পরিচারিকাদের ভরসাতেই থাকেন। কিন্তু, ভোটের সময় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় কেয়ারটেকার বা পরিচারক-পরিচারিকারা ছুটিতে (নিজের ভোট দেওয়ার জন্য) যেতে চান। ফলে অনেক সময়েই সল্টলেকের অনেক বৃদ্ধ-বৃদ্ধার শেষ পর্যন্ত একাকী বুথ কেন্দ্রে যাওয়ার সমস্যার কারণে ভোট দেওয়া হয় না। এবারের ভোটে তাঁদের যাতে সেরকম অবস্থায় না পড়তে হয়, তাই নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা আবেদন করলে তারাই তাঁদের ভোট কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেবে।