২৬/১১ সেই অভিশপ্ত কালো দিন। পাকিস্তানের জঙ্গী হামলায় তাজা রক্তে লুটোপুটি খেয়েছিল ২০০৮ সালে স্বপ্নের নগরী মুম্বাই। পাকিস্তানের দফায় দফায় এ হেন জঘন্য কাণ্ডে ভারতসহ সারা বিশ্ব স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল।
সেই অভিশাপের আজ ১১ বছর পূর্ণ হলো।
নিহত পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে এদিন ট্যুইট করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Today is the 11th anniversary of 26/11 #MumbaiAttacks. Solemnly remembering those who lost their lives on that day. My thoughts with their families. Homage to the brave police officers, military, and civilians, who risked their lives to save people. Let us unitedly fight terror
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) November 26, 2019
শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন শিলচরের প্রাক্তন সাংসদ সুস্মিতা দেব।
जो चढ़ गये पुण्यवेदी पर
लिए बिना गरदन का मोल
क़लम आज उनकी जय बोल।26/11 के अमर शहीदों को नमन.
इनकी क़ुर्बानियों पर बस एक विनम्र गुहार है कि हम सब इस मुल्क को एक मज़बूत मुल्क बनाए रखने के लिए इन शहीदों के नाम को बेतुके बयानों से धुंधला न करें।#MumbaiTerrorAttack pic.twitter.com/xnfLS7fqLq
— Sushmita Dev (@sushmitadevinc) November 26, 2019
২৬ থেকে ২৯ নভেম্বর ঘৃণ্য, উন্মাদ পাকিস্তানের জঙ্গী আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছিলেন ১৬৪ জন। আহত ৩০৮। সে ক্ষত বুকে নিয়ে বেড়াচ্ছে নিহত পরিবারের লোকজনেরা।
করাচি থেকে সমুদ্রপথে মুম্বাইয়ে আসে লস্কর-ই-তৈবার জঙ্গিরা। হামলার পুরো ছক কষেছিল পাকিস্তানের প্রভাবশালী সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইনটেলিজেন্স (আইএসআই)।
পাকিস্তান থেকে জলপথে মুম্বইয়ে ঢুকে ১০টিরও অধিক জায়গায় উন্মত্ত আক্রমণ চালায় জঙ্গিরা৷ সাগরে একটি ভারতীয় মাছ ধরার নৌকা ছিনতাই করে এবং মুম্বাই উপকূলে এসে তার নাবিককে হত্যা করে।
ছত্রপতি শিবাজী টার্মিনাস, ওবেরয় ট্রাইডেন্ট, তাজ হোটেল, লিওপোল্ড ক্যাফে, কামা হাসপাতাল, নরিম্যান হাউস, ইহুদি কমিউনিটি সেন্টার, মেট্রো অ্যাডল্যাবস এবং টাইমস অফ ইন্ডিয়া ভবন ও সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের পিছনের একটি গলিসহ মুম্বই বন্দরের অদূরে মাজাগাঁও ও ভিলে পার্লের একটি ট্যাক্সির মধ্যেও বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্ধর্ষ জঙ্গিরা।
ক্রমাগত গুলিচালনা ও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় শতাধিক মানুষ হত হন। জঙ্গিরা আগে থেকে তথ্য সংগ্র্হ করে পরিকল্পিতভাবেই যে এই হামলা চালিয়েছিল, পরে তা স্বীকার করেপাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা ‘ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স’ (আইএসআই)।
২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর থেকে ২৯ নভেম্বর একটানা সন্ত্রাসীরা নিরীহ মানুষের তাজা প্রাণগুলো কেড়ে নিয়েছে। খেলেছে মানুষের জীবন নিয়ে।
২৮ নভেম্বর ২৮ নভেম্বর সকালের মধ্যেই মুম্বই পুলিশ এবং অন্যান্য রক্ষীবাহিনী তাজ হোটেল ছাড়া বাকি আক্রান্ত স্থানগুলোকে সুরক্ষিত করে ফেলে।
২৯ নভেম্বর ‘অপারেশন ব্ল্যাক টর্নেডো’র সাহায্যভারতের জাতীয় রক্ষী বাহিনী (এনএসজি) তাজ হোটেলে লুকিয়ে থাকা জঙ্গিদের হত্যা করে শহরকে জঙ্গিমুক্ত করতে সক্ষম হয়।
উল্লেখযোগ্য, জীবিত অবস্থায় ধৃত একমাত্র জঙ্গি আজমল কাসভ জেরার মুখে স্বীকার করে, তারা পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সদস্য।
২০১০ সালের ৬ মে মুম্বইয়ের বিশেষ আদালত ধৃত জঙ্গি আজমল কাসভকে মৃত্যুদণ্ড দেয় বিচারক।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, হামলার দিনই, ২৬ নভেম্বর ভারত সফরে রাজধানী নয়া দিল্লিতে এসেছিলেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মোহাম্মদ কোরেশি৷
পরদিন ভারতের বিদেশমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের চণ্ডীগড়ে মধ্যাহ্নভোজে তাঁর বৈঠক হওয়ার কথা ছিল।
পাকিস্তানী জঙ্গির মুম্বাই হামলার খবর পাওয়া মাত্রই সে রাতেই প্রণববাবু কোরেশিকে নিজ দেশে ফিরে যেতে পরামর্শ দেন। পাকিস্তান বিমানবাহিনীর একটি বিমান এসে কোরেশিকে নিয়ে যায় ।
জঙ্গির দেশ পাকিস্তান মুম্বাই হামলার জেরে সারা বিশ্বজুড়ে নিন্দিত হয়।
প্রবল চাপের মুখে পড়ে ২০০৯ সালের ৭ জানুয়ারি, পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী শেরি রহমান সরকারিভাবে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন, আজমল কাসভ পাকিস্তানের নাগরিক।
এবং উক্ত বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রী রহমান মালিক স্বীকার করেন, ‘‘পাকিস্তানে বসেই হামলার পরিকল্পনা করেছিল জঙ্গিরা৷’’