বিশ্ববাসীর গর্ব কাদম্বিনী বসু গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম আমরা অনেকেই ভুলতে বসেছি । আসলে আমরা বড্ড অকৃতজ্ঞ । যাঁরা দু-অঞ্জলি ভরে এই বিশ্বকে দিয়ে গেছেন, তাঁদের স্মরণে রাখাটা আমাদের দুষ্কর হয়ে পড়েছে ।
কাদম্বিনী গাঙ্গুলি ছিলেন, ইউরোপীয় চিকিৎসা শাস্ত্রে শিক্ষিত দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম মহিলা চিকিৎসক ।
তাঁরও জন্ম এমন এক মহান সালে, যে সাল সমগ্র বিশ্ববাসীর কাছে আদরণীয় । উনবিংশ শতাব্দী তথা ১৮৬১ সালে জন্ম কাদম্বিনী দেবীর । একই সালে ধরণীর বুকে আবির্ভূত হয়েছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।
তিনি ব্রাহ্ম সংস্কারক ব্রজকিশোর বসুর কন্যা ।
কাদম্বিনী গাঙ্গুলি ব্রিটিশ ভারতের প্রথম দুই মহিলা স্নাতকের মধ্যে একজন ।
তাঁর জন্ম বিহারের ভাগলপুরে । তাঁর মূল বাড়ি ছিল বর্তমান বাংলাদেশের বরিশালের চাঁদসিতে ।
বেথুন স্কুলে পড়ার ১৯৭৮ সালে প্রথম মহিলা হিসেবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষায় দ্বিতীয় শ্রেণীতে পাশ করেন ।
উল্লেখ্য, কাদম্বিনীর দ্বারা প্রভাবিত হয়েই বেথুন কলেজে প্রথম এফএ (ফার্স্ট আর্টস), পরে অন্যান্য স্নাতক শ্রেণী আরম্ভ করা হয় ।
এছাড়া, বেথুন কলেজের প্রথম গ্রেজুয়েট ছিলেন কাদম্বিনী এবং চন্দ্রমুখী বসু ।
যে সমাজে পুরুষেরই অবাধ বিচরণ, সেখানে নিজের বলে স্থান করে নিয়েছিলেন তিনি । মনে ছিল না কোন ভয় । পথ যতই চরাই-উৎরাই হোক, সে দুর্গম পথও পাড়ি দেবার মতো ক্ষমতা, সাহস ছিল তাঁর । আর তাই আজ তিনি পথপ্রদর্শক নারী-পুরুষ সকলের ।
১৮৮৩ সালে সমাজসংস্কারক দ্বারকানাথ গাঙ্গুলির সঙ্গে বিবাহপাশে আবদ্ধ হন ।
১৯২৩ সালে মাত্র ৬২ বছর বয়সে এই তেজস্বী নারী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ।