শুক্রবার ত্রিপুরার ইন্দিরা গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও কর্মীদের ওপর মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবিতে চিকিৎসকরা ধর্নায় বসেন এদিন এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য কাজ থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ত্রিপুরার আইজিএমে এক গর্ভবতী মহিলার মৃত্যুকে ঘিরে তাঁর পরিবারের সদস্যদের ক্ষোভের মুখে পড়েন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ দীপঙ্কর দেবনাথ। তাকে মারধরও করা হয়। এই ঘটনায় ৫ আক্রমণকারিদের গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু নিম্ন আদালতে তারা জামিন পেয়ে যায়।
এদিকে গুরুতর আহত অবস্থায় ডাঃ দীপঙ্কর দেবনাথকে গোবিন্দ বল্লভ পন্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছে। এখন তিনি অনেকটা সুস্থ রয়েছেন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল ক।এ
দিকে ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন ও অল ত্রিপুরা গভর্নমেন্ট ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন ক্ষোভ ব্যক্ত করে জানায়, বিগত বছরে এ রাজ্যে ১০ টির অধিক এমন ঘটনা সংগঠিত হয়েছে।এমন ঘটনাগুলোকে ফাস্ট– ট্র্যাক কোর্টে বিচারের পাশাপাশি প্রত্যেক সরকারি হাসপাতালে স্থায়ী পুলিশ নিযুক্ত করার জোড়ালো দাবি জানানো হয় আইএমএ ও আটিজিডিএয়ে এর পক্ষ থেকে।
অন্যদিকে, আটিজিডিএয়ে পক্ষ থেকে কৌশিক চক্রবর্তী বলেন, চিকিৎসক–কর্মীরা ভলান্টারি হেলথ ক্যাম্প এমনকি রক্তদান শিবির পরিষেবার কাজ থেকেও বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, চিকিৎসক–কর্মীরা সপ্তাহদিন শুধুমাত্র রুটিন কাজ করবেন এবং অপেক্ষা করবেন যে সরকার এই ঘটনায় কোনও সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছেন কি না।
সরকারের কোনও হেলদোল পরিলক্ষিত না হলে তারা এভাবেই কাজ থেকে বিরত থাকবেন, বলেছেন কৌশিক চক্রবর্তী। এদিকে, ঘটনায় অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি প্রদান করার আশ্বাস দিয়েছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকুমার দেব। একই সঙ্গে, রোগী পরিষেবা বন্ধ করার পরিস্থিতিও মেনে নেবে না রাজ্য সরকার, জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী দেব।
আরও জানান, অভিযুক্তদের নিম্ন আদালতে জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে, তাই এডভোকেট জেনারেল ও রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশককে জেলা আদালতের জামিনের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁর সাফ কথা, চিকিৎসকদের সঙ্গে কোনও ধরণের অন্যায় মেনে নেওয়া হবে না। কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবেই। তিনি এও আশ্বাস দেন, চিকিৎসকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হবে। এবং হাসপাতালেও পুলিশ পিকেট বসানো হবে। যাতে আগামী দিনে এমন ধরণের ঘটনার সম্মুখিন না হতে হয়।