নয়াদিল্লিঃ Delhiতে Shraddha Walkar হত্যার ঘটনায় প্ৰতিদিনই নতুন নতুন তথ্য পুলিশের হাতে আসছে। হত্যার তদন্তে নেমে শ্ৰদ্ধার বন্ধুবান্ধকে জীজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ থেকে Delhi Police জানতকে পেরেছে- ১০ দিন আগেই প্রেমিকা শ্রদ্ধা ওয়াকারকে (Shraddha Walkar) খুন করবে বলে ঠিক করেছিল অভিযুক্ত আফতাব আমিন পুনাওয়ালা (Aftab Amin Poonawala)। যদিও একটি আবেগময় কারণে পরিকল্পনা বাতিল করে সে। শেষ পর্যন্ত ১৮ মে প্রেমিকাকে গলা টিপে খুন করে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল। কিন্তু ঠিক কোন কারণে শ্রদ্ধাকে আরও দশ দিন বাঁচতে দিয়েছিল আফতাব? সেই রহস্য এখনও অধরা।
Shraddhaর বন্ধু লক্ষ্মণ নাদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছিল দিল্লি পুলিশ। তিনি জানিয়েছেন, আফতাবের সঙ্গে থাকতে থাকতে শ্রদ্ধার জীবন নরক সমতুল্য হয়ে উঠেছিল। তিনি দিল্লির ওই ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে আসতে চাইতেন, কিন্তু কিছুতেই তা করতে পারতেন না।
কেন ‘নরক’ জীবন থেকে বেরোতে পারতেন না শ্রদ্ধা? লক্ষ্মণ জানান, তিনি আফতাব সম্পর্কে অত্যন্ত আবেগপ্রবণ ছিলেন। এতটাইই ঘনিষ্ঠ ভাবে এই সম্পর্কে তিনি জড়িয়ে পড়েছিলেন যে, চাইলেও আর বেরোতে পারছিলেন না। পুলিশকে লক্ষ্মণ এ-ও জানিয়েছেন, শ্রদ্ধা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে এক বার তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। লক্ষ্মণের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন Shraddha।
শ্রদ্ধার আর এক বন্ধু রজত পুলিশকে জানিয়েছেন, ২০১৮ সাল থেকে তাঁরা সম্পর্কে ছিলেন। প্রথমে ভালই থাকতেন। কিন্তু পরের দিকে আফতাব শ্রদ্ধাকে মারধর করতে শুরু করেছিলেন। এ ব্যাপারে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়েরের কথাও ভেবেছিলেন শ্রদ্ধার বন্ধুরা। কিন্তু আফতাবের প্রতি শ্রদ্ধার আবেগ ও অনুভূতির কথা ভেবে পুলিশকে কিছু জানাতে পারেননি তাঁরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেরায় Aftab জানিয়েছে, যেদিন সে শ্রদ্ধাকে খুন করে তার অন্তত ১০ দিন আগে খুনের ছক কষেছিল। কিন্তু উভয়ের মধ্যে ‘আবেগতাড়িত মুহূর্ত’ তৈরি হয়। তাই সেদিন আর প্রেমিকাকে খুন করে উঠতে পারেনি আফতাব। ৮ মে আফতাব ও শ্রদ্ধার মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়। সে দিনই প্রেমিকাকে শ্বাসরোধ করে খুন করবে বলে ঠিক করেছিল Aftab। কিন্তু ঝগড়ার মধ্যেই শ্রদ্ধা হঠাৎ কাঁদতে শুরু করেন। পুলিশের কাছে Aftab দাবি করেছে, প্রেমিকাকে কাঁদতে দেখে আবেগতাড়িত হয়ে পড়ে সে। এবং সেদিনের মতো খুনের পরিকল্পনা বাতিল করে।
যদিও দিন দশেক পর Shraddhaকে তো মরতেই হয়। খুনের পর দেহের ৩৫টি টুকরো করে Aftab। তারপরের ঘটনা সকলের জানা । এরপর Delhi শহরের বিভিন্ন জায়গায় তা ফেলতে থাকে। Shraddhaর অপরাধ ছিল তিনি প্রেমিককে বিয়ের জন্য চাপ দিয়েছিলেন। অথচ Aftabকে ভালবেসেই পরিবার, চাকরি, শহর ছেড়ে চলে এসেছিলেন তিনি Delhiতে।
পুলিশি তদন্তে জানা গেছে, গত মে মাসে Shraddha খুনের পর তাঁর দেহাংশ যখন নতুন কেনা ফ্রিজের ভেতর রাখা। সেই সময় ওই ঘরে একাধিক বান্ধবীর সঙ্গে যৌনতায় মেতেছিল Aftab।
Aftabএর এই নৃশংস চেহারা বাইরে থেকে দেখলে বোঝা ভার। তার কারণ Social Mediaয় একাধিক পোস্টে নিজেকে ‘উদার’ ও ‘নারীবাদী’ হিসেব তুলে ধরত সে। বস্তুত প্রেমিকাকে নৃশংস হত্যার পরেই মুখোশ খুলে গেল ২৮ বছরের এই যুবকের। সব মিলিয়ে Aftabএর বাইরের চেহারা এবং ভেতরের ব্যক্তিত্ব নিয়ে এখনও ধন্ধে রয়েছে Delhi Police। সে কি মানসিক ভাবে অসুস্থ? উত্তর পেতে এবার অভিযুক্তের নার্কো টেস্টের পরিকল্পনা করেছে Delhi Police।