অরুণাচলের দুটি জেলায় অ-অরুণাচলি ৬টি জনগোষ্ঠীকে স্থায়ী বাসিন্দার প্রমাণ পত্র দেওয়ার প্রচেষ্টার প্রতিবাদে বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে অরুণাচল । সড়ক থেকে বিক্ষোভ ছড়িয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর আবাস পর্য্যন্ত । প্রতিবাদী জনতা রবিবার ইটানগর পুলিশ থানা, জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের কার্যালয় লণ্ডভণ্ড করে অগ্নিসংযোগ করে, আক্রমণ চালায় অরুণাচলের সহকারী মুখ্যমন্ত্রী চউনা মেইনের বাসভবনে । প্রায় ৩০০০ বিক্ষোভকারী মুখ্যমন্ত্রী প্রেমা খান্ডুর বাসভবন লন্ডভন্ড করার চেষ্টা করলে পুলিশ গুলি চালায় । পুলিশের গুলিতে ৫ জন বিক্ষোভকারী গুলিবিদ্ধ হন, যাদের মধ্যে ২ জনের মৃত্যু হয় । নতুন করে ৫ জন লোক গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়ার পর ইটানগর ও নাহরলগুনে দাবানলের মত হিংসা ছড়িয়ে পড়ে । উত্তেজিত জনতা ইটানগরে ফোর্ড, নিশা্ন, হুন্ডাই, রেনল্ট, মাহিন্দ্রা গাড়ির শোরুম তছনছ করে । লুটপাট করে সোহমের শোরুম । তাছাড়া ইটানগরে অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফ্যাষ্টিভ্যালের সাজসরঞ্জাম নষ্ট করে এবং সেখানে রাখা ৫৭ টি গাড়ি জ্বালিয়ে দেয় । পরিস্থিতি বেগতিক দেখে প্রশাসনের তরফ থেকে তড়িঘড়ি অনির্দিষ্টকালীন কার্ফু জারি করা হয় । পথে নামানো হয় সেনা ।
জেলা প্রশাসনের তরফে জারি করা কার্ফু অবজ্ঞা করে বিক্ষোভকারীরা রসি টারির মৃতদেহ রাজ্য বিজেপির নির্মিয়মান কার্যালয়ে নিয়ে এসে সমাধিস্থ করে । এদিকে সেনা ইটানগরের পথে ফ্ল্যাগমার্চ করলে পরিস্থিতি খানিকটা নিয়ন্ত্রণে আসে । যদিও এই ঘটনায় সমগ্র অরুণাচলে উত্তেজনা বিরাজ করছে । এই ধরনের ঘটনা প্রবাহের মধ্যে্ রাজ্যের দুটি জেলায় অ- অরুণাচলিদের স্থায়ী বাসিন্দার প্রমাণপত্র দেওয়ার বিষয়ে উচ্চস্তরীয় কমিটির প্রতিবেদন গ্রহণ করা হবে না বলে অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী প্রেমা খান্ডু ঘোষণা করেন । পুলিশের গুলিতে মৃত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার হবে বলেও ঘোষণা করেন তিনি । এই প্রেক্ষাপটে সোমবার সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন তিনি উল্লেখ্য অরুণাচলে অ-অরুণাচলিদের স্থায়ী বাসিন্দার প্রমাণপত্র দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাজ্যের ১৮ টি ছাত্র সংগঠন ও কয়েকটি সামাজিক সংস্থার ডাকা ৪৮ ঘন্টার অরুণাচল বন্ধে নিরাপত্তারক্ষীর গুলিতে রসি টারি নামক এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হওয়ার পর রবিবার সকাল থেকেই বিক্ষোভকারীরা হিংসা ছড়ায় । রবিবার পুলিশের গুলিতে আরও দুই জনের মৃত্যু হয়, আহত হন আরও তিনজন । এভাবে স্থায়ী প্রমাণ পত্র দেওয়ার বিষয়ে হিংসায় অরুণাচলে মৃতের সংখ্যা দাড়িয়েছে ৩ জন, পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছেন আরো ৩জন। এদিকে বিক্ষোভকারীদের ছোড়া ঢিলে মোট আহত হয়েছেন ৩৫ জন, যাদের মধ্যে ২৪ জন পুলিশ কর্মী।
এদিকে আজ ছোটখাটো দু – একটি হিংসাত্মক ঘটনা ছাড়া ,বড়সড় হিংসার কোনো খবর পাওয়া যায়নি, তবে ইটানগর ও নাহরলগুনে কার্ফু জারি রয়েছে ।