নয়াদিল্লি: ১৯ নভেম্বর। বিশ্ব পুরুষ দিবস। বিশ্বব্যাপী লিঙ্গভিত্তিক সমতা, বালক ও পুরুষদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা এবং পুরুষের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার প্রধান উপলক্ষ হিসেবে প্রতিবছর দিবসটি পালন করা হয়।
তসলিমা নাসরিন পুরুষ দিবস নিয়ে আবারো কলম চালালেন।
লিখেছেন:
“‘আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস’ নামে একটা দিবস বানিয়েছে ‘পুরুষ অধিকার আন্দোলন’ MRA (Men’s Rights Activists) -এর সংগে যুক্ত একটি লোক। টমাস ওস্টার নাম। বানানো এই দিবসটি এখন পুরোপুরিই পুরুষ অধিকার আন্দোলনের এক পাল ভয়ংকর নারীবিদ্বেষী কর্মীর নিয়ন্ত্রণে।
এই দিবস প্রথম উদযাপিত হয় ভারতে, ২০০৭ সালে। ভারতের কিছু লোক নারীদের বিরুদ্ধে বিষোদগার ক’রে, সংসদ থেকে নারী কোটা বাতিল করার, নারী নির্যাতন আইন বিলুপ্ত করার, পণ প্রথা বহাল রাখার, ধর্ষণের জন্য ধর্ষককে নয়, নারীদের দোষ দেবার দাবি জানিয়ে ‘পুরুষ দিবস’ পালন করে।
পুরুষ নানা কারণে অত্যাচারিত হয়। কিন্তু পুরুষেরা পুরুষ হওয়ার কারণে অত্যাচারিত হয় না। নারীরাও নানা কারণে অত্যাচারিত হয়, নারীরা কিন্তু একটি ভিন্ন কারণেও অত্যাচারিত হয়, নারী হওয়ার কারণে।
নারীদের অধিকার আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য নারী বলে কাউকে অত্যাচার নির্যাতন করা চলবে না। পুরুষেরা যেহেতু পুরুষ হওয়ার কারণে অত্যাচারিত হয় না, তাই তাদের পুরুষ অধিকার আন্দোলন অর্থহীন একটি আন্দোলন”।
এর আগে তসলিমা নাসরিন লিখেছেন:
“আজকে নাকি পুরুষ দিবস (১৯ নভেম্বর)? কী করতে?
আমি তো জানতাম যারা নির্যাতিত, অত্যাচারিত, উপেক্ষিত, তারা যেন তাদের অধিকারের পক্ষে দাঁড়াবার জন্য একটি দিবস পায়, সে কারণেই দিবস টিবসের চর্চা চলে।
সে কারণেই নারী, শিশু, আদিবাসি, পঙ্গু, প্রতিবন্ধী, দরিদ্র, বাবা-মা, শিক্ষক, জীব জন্তু ইত্যাদির জন্য দিবসের আয়োজন করা হয়েছে।
পুরুষ অর্থাৎ লর্ড, কিং, রাজা, বাদশাহ, অত্যাচারী, নির্যাতক, ধর্ষক কী করবে দিবস দিয়ে? দুনিয়ার সব অধিকার তাদের। আরও অধিকার চাই”?