অফুরান প্রাণশক্তি নিয়ে নিজেকে লোকসংস্কৃতির বুকে উজার করে দেওয়া মানুষটি ছিলেন কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য।লোকসঙ্গীত গবেষক কালিকাপ্রসাদের কণ্ঠে লোক সংগীত শুনে মুগ্ধ ছিলেন এপার-ওপার বাংলার মানুষ।
দুঃখ যতই আসুক না কেন, অদ্ভুত এই মানুষটির ঠোঁটে লেগে থাকত এক চিলতে হাসি। তিনি গবেষক ছিলেন, গুণী ছিলেন। সর্বোপরি ছিলেন একজন প্রকৃত মানুষ।
সদাহাস্যময়, পরিশ্রমি, সর্বজনের প্রিয় কালিকাপ্রসাদ আজ আমাদের মধ্যে নেই ৩ বছর হয়ে গেল।
আজ ৭ মার্চ, এদিনে পৃথিবীর আকাশ থেকে অকালে খসে গিয়েছিল একটি নক্ষত্র।
প্রয়াণ দিবসে কালিকাপ্রসাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন বাঙালি অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
তুমি রবে নিরবে হৃদয়ে মম…
কালিকা প্রাসাদ রয়ে যাবে আমাদের মনে সারাজীবন গানে গানে… pic.twitter.com/8DhQZBxX36— Rituparna Sengupta (@RituparnaSpeaks) March 7, 2020
চোখের আড়াল হয়ে গেছেন কিন্তু আড়াল হননি বাংলা সংস্কৃতির তটরেখা থেকে। কালিকাপ্রসাদ এক আন্দোলন! কালিকাপ্রসাদ এক স্বপ্ন!
২০১৭ র ৭ই মার্চের সকালটা অন্য দিনের মতোই ছিল। কিন্তু তাল কেটে গেল এক মুহূর্তে তাঁর মৃত্যুর খবর শুনে। জানা গিয়েছিল দুর্ঘটনায় নাকি মৃত্যু হয়েছে সংগীত শিল্পী কালিকাপ্রসাদের। অনেকে তখন ব্যাপারটা গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু ঘটনাটা মোটেও গুজব ছিলনা। সত্যি সেই ভয়াবহ এক্সিডেন্টে প্রাণ হারিয়েছিলেন বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী।
সঙ্গীতের আবহেই জন্ম হয়েছিল কালিকাপ্রসাদের। গান ছিল তাঁর বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন।
পরিবারের প্রত্যেক সদস্য গানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
বাবা, কাকা, পিসি সকলেই গানের সাধনা করার পাশাপাশি সংগ্রহ করতেন লোকগান। বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চল থেকে সংগ্রহ করার পাশাপাশি জমিয়ে নিয়েছিলেন উত্তর-পূর্ব ভারতের এক বিস্তীর্ণ অঞ্চলের লোকগান।
‘লোকগানের রূপ, রস, গন্ধ— সব কিছুর অরিজিন্যালিটি বজায় রাখার চেষ্টা’তেই গড়ে ওঠে তাঁর গানের দল ‘দোহার’।
গবেষক কালিকা বলতেন, ‘‘আমরা লোকগান গাই। নতুন গান লিখি না বা গাই না। আমাদের গানে পশ্চিমী বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার হয় না। সেই জন্যই ‘দোহার’ গানের দল। ব্যান্ড নয়।’’
শেষ বলতে হয়, এই মৃত্যুটা যদি মিথ্যে হতো!