ফের ছন্দপতন বাংলার সাহিত্য জগতে। চলে গেলেন কলকাতার বিশিষ্ট কল্পবিজ্ঞানধর্মী সাহিত্যিক ও অনুবাদক অদ্রীশ বর্ধন।
বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। সোমবার রাত একটায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সাহিত্যমহলে।
বার্ধক্যজনিত নানা অসুস্থতার কারণে রবিবার সাহিত্যিক অদ্রীশ বর্ধনকে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে শেষ রক্ষা হল না। চির শান্তির দেশে চলে গেলেন অদ্রীশ।
অ্যাডভেঞ্চারের টানে জীবনে অনেক পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। একটি প্রতিষ্ঠানের পারচেজ ম্যানেজারের পদ থেকে ইস্তাফা দিয়ে পুরোপুরি লেখার পথ বেঁছে নেন তিনি। গোয়েন্দা কাহিনী দিয়ে লেখালেখির শুরু করেন। তাঁর সৃষ্ট গোয়েন্দা ইন্দ্রনাথ রুদ্র ও মেয়ে গোয়েন্দা নারায়নী বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান, কল্পবিজ্ঞান, অতীন্দ্ৰিয় জগৎ অতিপ্রাকৃত, অনুবাদ ইত্যাদির জন্য তাঁকে আজীবন মনে রাখবে সাহিত্যপ্রেমী বাঙালি।
ভারতের প্রথম কল্পবিজ্ঞান পত্রিকা ‘আশ্চর্য’ সম্পাদনা করেছেন তিনি। পত্রিকা, রেডিও, ফিল্ম ক্লাবের মাধ্যমে কল্পবিজ্ঞানকে আন্দোলন আকারে সংগঠিত করেছিলেন অদ্রীশ বর্ধন। পেয়েছেন একাধিক পুরস্কারও।
বিজ্ঞানের জগতে ছোটদের মন টানার জন্য এবং হাসির মোড়কে বৈজ্ঞানিক অ্যাডভেঞ্চারের নায়ক ‘প্রফেসর নাটবল্টুচক্র’-কে তৈরি করেছিলেন তিনি।
বাঙালি বৈজ্ঞানিক যে ফেলনা নয়, সেটা বোঝানোই ছিল তাঁর প্রধান উদ্দেশ্য ৷ হাসি-কৌতুকের মোড়কে প্রফেসর আর দীননাথের কাহিনী শুধু ছোটদেরই নয় ৷ বড়দেরও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল ৷ ইন্দ্রনাথ রুদ্র, ফাদার ঘনশ্যাম, প্রফেসর নাটবন্টু চক্র, রাজা কঙ্ক, জিরো গজানন, চাণক্য চাকলারা আজও মানুষের মনের কোণে জায়গা করে নিয়েছে ৷
১৯৩২ সালের ১ ডিসেম্বর কলকাতার এক শিক্ষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন অনুবাদক অদ্রীশ বর্ধন।